বিয়ের খাবার খেয়ে অসুস্থ এক নারী মারা গেছেন!
প্রকাশিত হয়েছে : ৮:১০:৩৬,অপরাহ্ন ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | সংবাদটি ২৬৪ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: সুনামগঞ্জ বিয়ের খাবার খেয়ে অসুস্থের সংখ্যা বেড়ে ৮৫ জনে দাঁড়িয়েছে। এরমধ্যে একজন নারী মারা গেছেন। আর ৮১ জন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। অসুস্থদের সকলেই পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হয়েছেন।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাতে সদর উপজেলার মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের সাদকপুর গ্রামের এক বিয়ে বাড়িতে খাবারের পর পরই এই ঘটনা ঘটে।
শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সিলেটের কলেরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জলি রানী দেব (২৭) নামের দুই সন্তানের জননী মারা যান। তিনি সুনামগঞ্জ শহরের ওয়েজখালীর মঞ্জু দেব’র স্ত্রী। মৃত জলি রানী দেব গিয়েছিলেন বান্ধবীর ছোট বোনের বিয়েতে। বিয়ের খাবার খেয়ে জলির ছোট দুই বোন, কাকা ও ছেলে-মেয়ে অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন।
জলি রানী দেবের মৃত্যুর বিষয়টির নিশ্চিত করেছেন তার দাদা শহরের ওয়েজখালীর বাসিন্ধা বিশ্বজিৎ দেব ও সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি মো. সহিদুর রহমান। ওসি জানান, বিয়ের খাবার খেয়ে অসুস্থ্ হয়ে জলি রানী দেব সিলেট কলেরা হাসপাতালে মারা গেছেন বলে জানা গেছেন। তার লাশ নিয়ে আসা হচ্ছে।
জানা যায়, বুধবার রাতে জেলার দিরাই উপজেলার ডাইয়ারগাঁও গ্রামের বর মিহির তালুকদারের সাথে শহরতলীর সাদকপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মৃত প্রানেশ দাশের মেয়ের বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। মেয়ের বাবার বাড়ি সাদকপুরে বিয়ের আয়োজন করা হয়। বরপক্ষ আসার পর বর ও কনে পক্ষের মানুষ একসঙ্গে খেতে বসেন। খাওয়ার পর পরই পেটে ব্যাথা শুরু হয়। এরপর অনেকের পাতলা পায়খানা শুরু হয়। পরে বৃহস্পতিবার ৪২ জনকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার আর দুইজন ভর্তি হন। অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় কন্যার মা ছন্দা রানী তালুকদার ও কাকাতো বোন বৃষ্টিকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
এদিকে দিরাইয়ের বর পক্ষের লোকজন রাতের খাবার খেয়ে বাড়ি চলে যাওয়ায় পর অনেকেই বাড়িতে গিয়ে পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হন। বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে শুক্রবার পর্যন্ত আক্রান্তদের মধ্যে দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চারজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন ও ৩৭ জন ভর্তি হয়েছিলেন। এর মধ্যে চারজনকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। ৩৩ জনের চিকিৎসা চলছে দিরাই হাসপাতালে।
দিরাই দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক ডা. সুমন রায় চৌধুরী বলেন,‘ বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার মোট ৩৭ জন ভর্তি হয়েছিলেন। এরমধ্যে শুক্রবার দুপুরে চারজনকে সিলেটে প্রেরণ করা হয়েছে। আরও চারজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। ভর্তিকৃত রোগীদের চিকিৎসা চলছে।’
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ধারনা করা যাচ্ছে খাবারে কোন ধরনের বিষক্রিয়া হতে পারে। বৃহস্পতিবার রাতে ৪২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। দুইজনকে সিলেটে স্থানাস্তর করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে আরও দুইজন ভর্তি হয়েছে। চিকিৎসা চলছে, সবাই সুস্থ্য আছেন। ’
কনের জেঠু (বাবার বড় ভাই) সিভিল সার্জন ডা. আশুতোষ দাশ বলেন, ‘আমরা ধারণা করছি অতিরিক্ত গরমের কারণে কিছু খাদ্যে (সালাদ) বিষক্রিয়ায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। কারণ বিয়ের অনুষ্ঠানে ৪-৫ শত মানুষ খাওয়া-দাওয়া করেছেন। আমি নিজেও এসব খাবার খেয়েছি। আক্রান্তদের চিকিৎসা চলছে এবং সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে।