কাশ্মীরের কারফিউ তুলতে ওআইসির হুশিয়ারী!
প্রকাশিত হয়েছে : ৫:৪৭:৫৮,অপরাহ্ন ১৭ আগস্ট ২০১৯ | সংবাদটি ৪৬৪ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: ভারতকে অবিলম্বে কাশ্মীর উপত্যকার কারফিউ তুলে নিতে হুশিয়ারী দিয়েছে ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)। টানা ১২ দিন ধরে অধিকৃত কাশ্মীর অবরুদ্ধ অবস্থায় আছে, সেখানকার মানব জীবন পঙ্গু করে বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেয় ভারতের মোদী সরকার।
পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি একটি ভিডিও বার্তায় ওআইসির সিদ্ধান্তের কথা প্রকাশ করেছেন বলে জানায় দেশটির প্রধান সারির গণমাধ্যম ডন। কুরেশি ‘ওআইসির বিবৃতিকে পাকিস্তানের জন্য আরেকটি কূটনৈতিক অর্জন বলে দাবি করেন। ভারতকে অবিলম্বে অধিকৃত কাশ্মীর থেকে কারফিউ তুলতে আহ্বান জানায় ওআইসি।’
মিঃ কুরেশি জানান যে, সম্প্রতি তিনি জেদ্দায় ওআইসির সদস্যদের জড়িত করে এবং সংগঠনের একটি বৈঠকে অংশ নেন। যেখানে সদস্যদের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। ‘ফলস্বরূপ, ওআইসি একটি প্রেস বিবৃতিও জারি করেছে।’
ভারত অধিকৃত কাশ্মীরের জনগণ খাবার ও ওষুধের ঘাটতির মুখোমুখি এবং কারফিউর কারণে কাশ্মীরিরা হাসপাতালেও পৌঁছাতে পারছে না বলে কুরেশি জানান। তিনি বলেন, ‘কারফিউ তোলার দাবি পাকিস্তান থেকে নয়, গোটা মুসলিম বিশ্ব থেকে আসছে। জাতিসংঘের সুরক্ষা কাউন্সিল ওআইসির উত্থাপিত কণ্ঠের দিকেও মনোযোগ দেবে বলেও তিনি আশাবাদী। ইমরান খান কাশ্মীর ইস্যুতে জাতিগুলোকে ঐক্যবদ্ধ থাকারও আহ্বান জানিয়েছেন।
ওআইসির জেনারেল সেক্রেটারিয়েট জম্মু ও কাশ্মীরের মুসলমানদের ধর্মীয় স্বাধীনতা হ্রাসের রিপোর্টে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এমনকি সেখানে ঈদের মতো শুভ উপলক্ষেও সম্পূর্ণ লকডাউন করে রাখা হয়েছে। গণজামাতকে অস্বীকার করা এবং মুসলমানদের ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন করা থেকে বিরত রাখছে ভারত সরকার।
ধর্মীয় অধিকারকে অস্বীকার করা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের মারাত্মক লঙ্ঘন এবং এটি বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের একটি বিরোধী আচরণ। তাই ওআইসি ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে কাশ্মীরি মুসলিমদের অধিকার সংরক্ষণ এবং তাদের বাধা ছাড়াই তাদের ধর্মীয় অধিকার প্রয়োগ নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে।
ওআইসি জাতিসংঘ এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক সংস্থাসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কেও জাতিসংঘের সুরক্ষা কাউন্সিলের প্রাসঙ্গিক প্রস্তাবের ভিত্তিতে জম্মু ও কাশ্মীর বিরোধের আলোচনার সমাধানের জন্য প্রচেষ্টাকে ত্বরান্বিত করার আহ্বান জানিয়েছে।
শুক্রবার পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে টেলিফোন করেন এবং কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে চলমান উত্তেজনা নিয়ে আলোচনা করেন। ১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবসকে একটি কালো দিবস পালন করে পাকিস্তান। দেশব্যাপী এবং আজাদ জম্মু ও কাশ্মীরের অনুষ্ঠিত উপত্যকায় ভারতীয় আগ্রাসন ও অত্যাচারের নিন্দা জানিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
ইমরান খান বিশ্বের বিভিন্ন নেতাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করেন এবং ভারতের সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল হওয়াসহ ভারতের সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলো সম্পর্কে তাদের অবহিত করেন যা অধিকৃত কাশ্মীরের স্বায়তশাসন পরিবর্তন করে। এর আগে, খান তার টুইটে কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানিদে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শাসন অধিষ্ঠিত উপত্যকায় তার নিন্দিত নকশা অর্জনে ব্যর্থ হবে।
তিনি টুইট বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী, হিন্দু আধিপত্যবাদী মোদী সরকারের জানা উচিত যে, সেনাবাহিনী, জঙ্গি এবং সন্ত্রাসীদের উচ্চতর বাহিনীর দ্বারা পরাস্ত করা যেতে পারে; তবে ইতিহাস আমাদের বলছে, মৃত্যুর পরোয়া না করে কোনো জাতি যখন স্বাধীনতা সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ হয় তখন কোনো শক্তিই তাদের লক্ষ্য অর্জনে বাধা দিতে পারে না।’
অন্য একটি টুইটে তিনি বলেছিলেন, ‘এ কারণেই ভারত অধিকৃত কাশ্মীরে অতি মাত্রায় হিন্দুত্ববাদী মোদী নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারের ফ্যাসিবাদী কৌশল নিয়ে কাশ্মীরি মুক্তি সংগ্রামকে হতাশ করার চেষ্টা মারাত্মকভাবে ব্যর্থ হবে।