অঘোষিত ধর্মঘট, দুর্ভোগে সাধারণ যাত্রী!
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:৩৩:০৬,অপরাহ্ন ২১ নভেম্বর ২০১৯ | সংবাদটি ৭১০ বার পঠিত
ইমরান আহমদ:: সিলেটসহ সারাদেশে চলছে পরিবহণ ধর্মঘট। দেশের অন্যান্য স্থানে দু’দিন পরিবহণ ধর্মঘট থাকলেও সিলেটে কোন প্রভাব পড়েনি। কিন্তু হঠাৎ অঘোষিত ধর্মঘটের কারণে বিপাকে পড়েন সিলেটের সাধারণ যাত্রীরা।
জানা গেছে, বুধবার (২০) নভেম্বর থেকে গুঞ্জন চলছিলো বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সিলেটেও চলবে পরিবহণ ধর্মঘট। কিন্তু রাত ৮টা ৯টার দিকে পরিবহণ ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে এমন খবর প্রচার হয় সিলেটের বিভিন্ন স্থানে। এমনকি সিলেট কদমতলী বাস স্ট্যান্ডের কয়েকজন বাস চালকও জানান ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। এমন সংবাদ মুহুর্তের মধ্যেই ছড়িয়ে পড়ে পাড়া-গাঁয়ে। সিলেটের বিভিন্ন উপজেলার মানুষ জেলা সদর আসার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়ে রাস্তায় এসে থমকে পড়েন। ঘন্টার পর ঘন্টা রাস্তায় দাড়িয়ে থাকলেও মিলেনি কোন যানবাহন। ট্রাক, পিকাআপ বা প্রাইভেট গাড়ি রাস্তায় চলাচল করলেও যাত্রীবাহী কোন গাড়ি দেখা যায়নি। তবে দু’একটি সিএনজি-অটোরিক্সা চললেও যাত্রীর সংখ্যায় বেশি হওয়ায় তারাও হিমশিম খাচ্ছিলো। এসময় অপেক্ষমান যাত্রীরা অবরোধকারীদের নানাভাবে সমালোচনা করতে শোনা যায়। অনেকে অপেক্ষা করেও গাড়ি না পেয়ে পায়ে হেটে সিলেট শহরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন।
বিশেষ করে পূর্ব সিলেটের জকিগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ উপজেলার সাধারণ যাত্রীরা বেশি দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন।
সরেজমিন দেখা গেছে, গোলাপগঞ্জ উপজেলার ঢাকাদক্ষিণ থেকে শুরু করে সিলেট কদমতলী পর্যন্ত রাস্তায় দাড়িয়ে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছেন শত শত যাত্রী। তাদের মধ্যে রয়েছেন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা, চাকুরীজীবি, ব্যবসায়ী ও দিনমজুর।
কয়েকজন যাত্রীর সাথে আলাপ করে জানা যায়, কেউ সকাল ৮ টায়, কেউ ৯টায় বাড়ি থেকে বের হয়ে রাস্তায় এসে দেখেন যাত্রীবাহি কোন গাড়ি নেই। প্রাইভেট কার, লাইটেস, নোহা, ট্রাক চলছে অবিরত। ঘন্টা দু’এক পর পর হঠাৎ সিএনজি-অটোরিক্সার দেখা পেলে হামলে পড়েন সকলে। কে কার আগে উঠবেন। এসময় তাড়াহুড়া করতে গিয়ে অনেক যাত্রী আহত হচ্ছেন বলেও জানান যাত্রীরা।
চারখাই থেকে প্রথমে সিএনজি-অটোরিক্সায় করে চৌঘরী সিএনজি পাম্প, এখান থেকে পিকআপে করে গোলাপগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ থেকে নোহায় সিলেট শহরে আসছিলেন চারখাই ইউনিয়নের নেয়ামত শাহ নামে এক যাত্রী। তিনি বলেন, বাড়ি থেকে বের হয়ে চারখাই এসে দেখি সিলেটের কোন গাড়ি নেই। একটি সিএনজি গ্যাসের জন্য আসছিলো, সে বললো গোলাপগঞ্জ চৌমুহনীতে যাবনা, সিএনজি পাম্প পর্যন্ত যেতে চাইলে উঠেন। পাম্পে নেমে হেটে গোলাপগঞ্জ দিকে আসতে আসতে অনেক গাড়িকে সিগনাল দিলাম, একটিও আটকায়নি। পরে একটি পিকআপকে সিগনাল দিলে তার সাথে গোলাপগঞ্জ চৌমুহনীতে আসি।
গোলাপগঞ্জ উপজেলার ভাদেশ্বর শেখপুর গ্রামের বাসিন্দা, উপজেলার শ্রেষ্ঠ খামারী আলহাজ্ব নুরুল আম্বিয়া বলেন, সিলেটে একটি ক্লিনিকে রোগী দেখতে বাড়ি থেকে বের হয়ে দেখি রাস্তায় কোন গাড়ি নেই। মীরগঞ্জ থেকে পায়ে হেটে ভাদেশ্বরে এসেও দেখি কোন গাড়ি নেই। পরিচিত একজনের মোটর সাইকেলে করে ঢাকাদক্ষিণ পর্যন্ত কোন রকম আসি। এভাবে গোলাপগঞ্জ চৌমুহনীতে আসার পর পায়ে হেটে বৈটিকর পর্যন্ত আসি। পরিচিত একজন দেখে নিজের প্রাইভেট গাড়িতে তুলে সিলেটে নিয়ে আসেন।