সিলেটের আলোচিত খাদিজা হত্যা চেষ্টায় বদরুলের যাবজ্জীবন
প্রকাশিত হয়েছে : ৭:১৭:৫৫,অপরাহ্ন ০৮ মার্চ ২০১৭ | সংবাদটি ১২২০ বার পঠিত
সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রী খাদিজা বেগম নার্গিসকে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টা মামলায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অনিয়মিত ছাত্র ও শাবি ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক বদরুল আলমকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ২ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।বুধবার দুপুরে সিলেট মেট্রোপলিটন দায়রা জজ আদালতের বিচারক আকবর হোসেন মৃধা এ রায় দেন। এ সময় আদালতে একমাত্র আসামি বদরুল উপস্থিত ছিলেন।এর আগে রবিবার যুক্তিতর্ক শেষে বিচারক আকবর হোসেন মৃধা রায় ঘোষণার জন্য আজ ০৮ মার্চ দিন ধার্য করেন।
গত ১ মার্চ সিলেট মুখ্য মহানগর হাকিম সাইফুজ্জামান হিরোর আদালত থেকে মামলাটি মহানগর দায়রা জজ আদালতে স্থানান্তর করা হয়। ওই আদালতে আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদানে সীমাবদ্ধতা থাকায় রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে দায়রা জজ আদালতে আসে মামলাটি।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৩ অক্টোবর এমসি কলেজের পুকুরপাড়ে খাদিজাকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে বদরুল। ঘটনার পরপরই শিক্ষার্থীরা তাকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। এ ঘটনায় খাদিজার চাচা আবদুল কুদ্দুস বাদী হয়ে বদরুলকে একমাত্র আসামি করে মামলা দায়ের করেন। একই বছরের ৫ অক্টোবর বদরুল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। পরে তাকে কারাগারে প্রেরণ করেন আদালত। এছাড়ার ঘটনার পর শাবি থেকে চিরতরে বহিষ্কার করা হয় বদরুলকে।
পরে ৮ নভেম্বর খাদিজা হত্যাচেষ্টা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিলেট নগরীর শাহপরান থানার এসআই হারুনুর রশীদ আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। পরে ১৫ নভেম্বর আদালত চার্জশিট গ্রহণ করেন। গত ২৯ নভেম্বর আদালত বদরুলের বিরুদ্ধে ৩২৪, ৩২৬ ও ৩০৭ ধারায় অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন।
এ মামলায় বাদীপক্ষে মোট ৩৪ জনের সাক্ষ্য শুনেছে আদালত। খাজিদা নিজেও গত ২৬ ফেব্রুয়ারি আদালতে গিয়ে নিজের জবানবন্দি তুলে ধরেন।
সাক্ষ্যে খাদিজা বলেন, ৫-৬ বছর আগে তাদের বাড়িতে লজিং মাস্টার হিসেবে থাকতেন বদরুল। সে সময় থেকেই তাকে উত্যক্ত করে আসছিলেন।
“বদরুলের নৃশংস হামলায় আমি সারা জীবনের জন্য প্রতিবন্ধী হয়ে গেছি। আমি তার সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি,” সাক্ষ্যে বলেন খাদিজা।
শাবি ছাত্রলীগ নেতা বদরুল আলমের চাপাতির কোপে গুরুতর আহত হওয়া খাদিজাকে প্রথমে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে নেয়া হয়। কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর ২৮ নভেম্বর সাভারে সিআরপিতে ভর্তি করা হয় খাদিজাকে। প্রায় তিন মাস সেখানে চিকিৎসাধীন থাকার পর শুক্রবার সুস্থ হয়ে সিলেটে নিজের বাড়িতে ফিরেছেন খাদিজা। মাঝে এক ফেব্রুয়ারি সপ্তাহখানেকের জন্য বাড়ি ঘুরে যান তিনি।