কেমুসাস তরুণ সাহিত্য পুরস্কার প্রদান
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:৫২:২৬,অপরাহ্ন ১৯ জানুয়ারি ২০১৭ | সংবাদটি ৮৭৯ বার পঠিত
বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দেয়া হলো দেশের প্রাচীনতম সাহিত্য প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ প্রবর্তিত তরুণ সাহিত্য পুরস্কার। এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কেমুসাস সাহিত্য আসর কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সাবেক সভাপতি হারুনুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, সাহিত্য সবার মনের কথা বলে। পৃথিবীর সব ধরণের অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে যেসব লেখকরা কথা বলেন, তাদের কলমের লেখনি ইতিহাসে অনন্তকাল টিকে থাকে। তিনি বলেন, কেমুসাসের সাহিত্য আসর থেকে যেসব সাহিত্যিক তৈরী হয়েছে তারা আমাদের দেশসহ বিশে^র সম্পদে পরিণত হবে। কেমুসাস থেকে বেরিয়ে আসা লেখকরা দেশ ও জাতির মুখ উজ্জ্বল করবে। তরুণরা আমাদের আগামীর স্বপ্ন, তাদেরকে লালন-পালন ও পরিচর্যা সবার জন্য অপরিহার্য।
কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের ৮০০ ও ৯০০তম সাহিত্য আসরের পূর্তিতে তরুণ সাহিত্য পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক এডভোকেট আব্দুস সাদেক লিপন। অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কেমুসাসের সহ-সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মাহমুদ রাজা চৌধুরী। সাহিত্যকর্মী ফায়যুর রাহমানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) জুবায়ের সিদ্দিকী, কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মুজিবুর রহমান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক মানিক, কেমুসাসের সাবেক সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক কবি সৈয়দ মবনু।
মো: সালাউদ্দিন আহমদের পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হওয়া সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মতিন উদ্দিন জাদুঘরের পরিচালক মোস্তফা শাহ জামান চৌধুরী বাহার, শিক্ষাবিদ লে. কর্নেল (অব.) সৈয়দ আলী আহমদ, কেমুসাসের সাবেক সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক গল্পকার সেলিম আউয়াল ও প্রভাষক কবি নাজমুল আনসারী।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মুজিবুর রহমান চৌধুরী বলেন, কবি সাহিত্যিকরা হচ্ছেন ফুলের মতো। তাদের লেখনীর সুবাসে আমাাদের সমাজ সুবাসিত হয়। কেমুসাস তার জন্মলগ্ন থেকে কবি সাহিত্যিকদের পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় কেমুসাস তরুণ সাহিত্য পুরস্কার প্রদান করা একটি উল্লেখযোগ্য বিষয়। যারাই এই পুরষ্কার পেয়েছেন তাদেরকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) জুবায়ের সিদ্দিকী বলেন, তরুণদেরকে সাহিত্যের প্রতি মনোযোগী ও উজ্জিবিত করতে কেমুসাস অগ্রণী ভুমিকা পালন করছে। এই পুরষ্কার প্রদানের মাধ্যমে তরুণরা আরো উজ্জিবিত হয়ে সাহিত্যের প্রতি ভালোভাবে মনোনিবেশ করতে পারবে। আশা করি এর ফলে তরুণরা বাংলা সাহিত্যে অনেক অবদান রাখতে পারবে।
সাধারণ সম্পাাদক আজিজুল হক মানিক বলেন, আজকে যারা কেমুসাস তরুণ সাহিত্য পদক পেয়েছেন তাদেরকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। সেই সাথে তাদেরকে আহবান জানাবো যে, এদেশের মাটি ও মানুষের জন্য ভালো কাজ করতে হবে। নিজেদের লেখনীর মাধ্যমে সমাজকে উপকৃত করতে হবে। সমাজ উপকৃত হলে এই পুরষ্কার প্রদান অনুষ্ঠান সফল হবে।
সৈয়দ মবনু বলেন, একজন লেখকের জন্য পুরস্কারই চূড়ান্ত প্রাপ্তি নয়। তাকে দৃষ্টি রাখতে হয় অনেক দূরে। পৃথিবীতে অনেক বড় বড় লেখকেরা পুরস্কারের তোয়াক্কা করেন নি। আজ যারা পুরস্কৃত হলেন, তাদেরকেও সেদিকে লক্ষ রেখে সাহিত্যসাধনা চালিয়ে যেতে হবে।
স্বাগত বক্তব্যে দেওয়ান মাহমুদ রাজা চৌধুরী বলেন, কেমুসাসের প্রতি ১০০টা সাহিত্য আসর পর পর আমরা তরুণ সাহিত্য পুরষ্কার দিয়ে থাকি। তারই ধারাবাহিকতায় ৮০০তম ও ৯০০তম সাহিত্য আসরে নিয়মিত অংশগ্রহনকারী তরুণ সাহিত্য কর্মীদের লেখা বিচারকমন্ডলীর যাচাই-বাচাই-এর মাধ্যমে এই তরুণ সাহিত্য পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে। আন্তরিকতার সাথে অনুষ্ঠানটিকে সুন্দর করার চেষ্ঠা করেছি।
সভাপতির বক্তব্যে এডভোকেট আব্দুস সাদেক লিপন বলেন, তরুণদেরকে সাহিত্য ক্ষেত্রে উৎসাহ প্রদানে কেমুসাস তার জন্মলগ্ন থেকে কাজ করে যাচ্ছে। সকলের সহযোগিতা নিয়ে আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে। এই অনুষ্ঠানকে সফল করতে যারা পরিশ্রম করেছেন তিনি সকলের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
উল্লেখ্য, কেমুসাসের ৮০০ তম ও ৯০০ তম সাহিত্য আসরে নিয়মিত অংশগ্রহনকারী তরুণ সাহিত্যকর্মীদের লেখা বিচারক মন্ডলীর মাধ্যমে যাচাই-বাচাই করে কেমুসাস তরুণ সাহিত্য পুরস্কার প্রদান করা হয়। কেমুসাসের ৮০০তম সাহিত্য আসরে কবিতায় বাশিরুল আমীন ও শামীমা কালাম এবং ছড়ায় দেলোয়ার হোসেন দিলুকে পুরস্কৃত করা হয়। ৯০০তম সাহিত্য আসরে কবিতায় মামুন হোসেন বিলাল ও মাসুদা সিদ্দিকা রুহী, ছড়ায় শাহ মিজান ও গল্পে মিনহাজ ফয়সালকে পুরষ্কার প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে শিশু অধিকার রক্ষার দাবিতে পায়ে হেঁটে দেশের ৬৪ জেলা ভ্রমণকারী তরুণ রুবার নাসিম তালুকদার বক্তব্য রাখেন।