‘খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে ব্যস্ত, এরশাদের মৃত্যু নিয়ে ‘ভাবার’ সময় নেই’!
প্রকাশিত হয়েছে : ২:৩২:২৪,অপরাহ্ন ১৪ জুলাই ২০১৯ | সংবাদটি ৮৩৭ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা শোক জানালেও এখনই এ বিষয়ে ভাববার সময় নেই বিএনপি নেতা রিজভীর। এছাড়া সাবেক এই রাষ্ট্রপতির মৃত্যুতে এখনই শোক বা প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেও না বিএনপি।
বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে আমরা এখন ব্যস্ত। অন্য কিছু নিয়ে ভাবনার সময় এখন নেই।
রবিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব। নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেললের আয়োজিন করা হয়।
রিজভী বলেন, ‘আপনারা জানেন যে, আমাদের চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য বিভাগীয় সমাবেশগুলো অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ১৮ তারিখ বরিশাল, ২০ তারিখ চট্টগ্রাম- এসব নিয়ে আমরা ব্যস্ত। কয়েকদিন পরে জানাব।’
স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময়ে রিজভী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের ভিপি এবং কিছুদিন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সভাপতিও ছিলেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান। সংবাদ সম্মেলনে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সময়ে ঢাকা মহানগরী ছাত্রদলের সভাপতি বর্তমানে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবুল খায়ের ভূঁইয়া ও ওই সময়ে সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের নেতা ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক বর্তমানে দলের যুগ্ম খায়রুল কবির খোকনও উপস্থিত ছিলেন।
রিজভী বলেন, ‘স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের ওই সময়ে আমাদের ওপরই সবচেয়ে বেশি নিপীড়ন-নির্যাতনের মাত্রাটা বহন করতে হয়েছিল। সে সময়ের দিনগুলো স্মরণ করলে এখন শিউরে হয়ে উঠতে হয়।’
সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার বিরুদ্ধে মামলার প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা সাহেব বলেছেন, প্রধান বিচারপতি থাকার পরেও বিচার পাইনি আর এখন তো ন্যায়বিচার পাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। একজন প্রধান বিচারপতিকে তার স্বাধীন বিচারকর্মের কারণে প্রাণভয়ে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে। কীভাবে চলে যেতে হয়েছে, কারা চলে যেতে তাকে বাধ্য করেছেন এটা নিশ্চয়ই আপনারা জানেন। কী ভয়ংকর পরিস্থিতিতে সরকারের লোকেরা মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে তাকে দেশছাড়া করেছে।’
বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন ও গণতন্ত্রের পক্ষে কথার বলার কারণেই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আজ কারাগারে। সরকারের কুকীর্তি-অপকীর্তি এবং অনাচারের প্রতিবাদ করার জন্যই তিনি কারাগারে। ক্ষমতার নেশায় মজে শেখ হাসিনা অন্যায়কে ন্যায় এবং ন্যায়কে অন্যায় হিসেবে প্রতিপন্ন করছেন।’
রিজভী আরও বলেন, ‘দেশের কৃষক-শ্রমিক-শিক্ষক-চিকিৎসক-প্রকৌশলী-সাংবাদিক সকলেই বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য সোচ্চার। দেশের সকল জনগোষ্ঠী তার মুক্তি চায়।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘দেশে গ্রেপ্তার বাণিজ্য চলছে। বর্তমানে মধ্যরাতের সরকারের কৃপাধন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সরকারের পক্ষভুক্ত হওয়ার কারণে এরা এখন মানুষের নাগরিক স্বাধীনতার প্রতিপক্ষ। গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তিসহ রিমান্ড পাওয়া-না পাওয়া নিয়ে দর কষাকষি করা হয়। টাকা দিতে না পারলে জটিল মামলা দেয়া হবে বলে হুমকি দেয়া হয়। বিএনপির নেতাকর্মীরা গ্রেপ্তার হওয়ার পরে তাদের থানায় নিয়ে যাওয়ার পর সৃষ্টি হয় এক বিষাদ ঘনঘোর পরিস্থিতি। পুলিশ স্টেশনগুলো যেন এখন দাসবাজারে পরিণত হয়েছে। আর এই দাসরা হচ্ছেন বিএনপিসহ সাধারণ জনগণ।
বন্যা দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের আহ্বানও জানান রিজভী। তিনি অভিযোগ করে বলেন, দেশের বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষের পাশে থাকার ঘোষণা দেয়ার পরও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার কোনো ত্রাণ দিচ্ছে না।
রিজভী বলেন, লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে খাদ্য ও বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকটে হাহাকার করছেন। ত্রাণের জন্য লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থেকেও কোনো ত্রাণ পাচ্ছেন না বন্যাকবলিত মানুষ।
তিনি বলেন, গত দুদিন আগে প্রধানমন্ত্রী তাদের দলীয় সভায় বন্যাদুর্গতদের পাশে থাকার ঘোষণা দিলেও এখনও পর্যন্ত ত্রাণ তৎপরতার কোনো উদ্যোগই দেখা যায়নি।