ছাত্রদলের নতুন কমিটিতে স্থান পেতে চলছে তদবির!
প্রকাশিত হয়েছে : ৫:৩২:৪৯,অপরাহ্ন ১৭ জুন ২০১৯ | সংবাদটি ৪৬৭ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: কাউন্সিলের মাধ্যমে আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে ছাত্রদলের নতুন কেন্দ্রীয় সংসদ গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন বিএনপির হাইকমান্ড। তবে শুধু সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে, না কি সব পদে নির্বাচন হবে-সে বিষয়ে এখনো কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি কমিটি গঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সার্চ কমিটির সদস্যরা।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ পেতে ইতোমধ্যে লবিং-তদবির এবং ব্যাপক দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছেন নেতারা। অনেকে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের কাছে যখন-তখন গিয়ে হাজির হচ্ছেন। তবে লবিং-তদবির নয়, কাউন্সিলদের মতামতের ভিত্তিতেই নেতা নির্বাচিত হবে বলে জানিয়েছেন কমিটি গঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সার্চ কমিটির সদস্যরা। ছাত্রদলের কমিটি গঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সার্চ কমিটির সদস্য ও পদ প্রত্যাশীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
এ বিষয়ে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, শুধু সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, না কি সব পদে নির্বাচন হবে- এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
কাউন্সিল কি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে হবে অনুষ্ঠিত হবে- জানতে চাইলে মিলন বলেন, আমরা সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি এবং বিভিন্ন স্তর পার করছি। আর আমাদের টার্গেট ৪৫ দিনের মধ্যে কাউন্সিল করা। তবে কোনো কারণে সময় বাড়াতে হলে তা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কিন্তু আমরা ৪৫ দিন ধরেই কাজ করছি।
এদিকে সুপার ফাইভে থাকার জন্য যেসব নেতারা দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছেন, তারা হলেন- কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের নেতা আসাদ টিটু, বিশ্বজিৎ ভদ্র, লিংকন মাহমুদ, কাজী রওনুকুল ইসলাম শ্রাবন, মেরাজ আজিম, সরদার আমিরুল ইসলাম সাগর, আরাফাত বিল্লাহ, মামুন খান, আল মেহেদী তালুকদার, তানভীর রেজা রুবেল, হাফিজুর রহমান, শাহনেওয়াজ, তানজিল হাসান, সাইফ মাহমুদ জুয়েল। আর এসব নেতাদের মধ্যে থেকেই সুপার ফাইভ নির্বাচিত হতে পারে বলে ছাত্রদলের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রদলের এক সিনিয়র নেতা বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বিবাহিতরা ছাত্রদলের কমিটিতে থাকতে পারবেন। তবে সার্চ কমিটির কয়েক জন্য সদস্য চাচ্ছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি আল মেহেদী তালুকদারকে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি করতে চাচ্ছেন। এ কারণে হয়তো তারা গঠনতন্ত্র পরিবর্তনও করবেন। কিন্তু মেহেদী বিয়ে করেছেন। আর তিনি একটি নয়, দুটি বিয়ে করেছেন।
অপরদিকে কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হলেও বয়সসীমা না করে ধারাবাহিক কমিটির দাবিতে গত ১১ জুন থেকে আন্দোলন করছেন ছাত্রদলের সাবেক বিক্ষুব্ধরা। তাদের দাবি, বয়সসীমা তুলে দিয়ে একটি স্বল্পমেয়াদী কমিটি গঠন করতে হবে।
জানতে চাইলে ভেঙে দেওয়া কমিটির সহ-সভাপতি এজমল হোসেন পাইলট বলেন, বয়সের সীমারেখা না রাখা, আপাতত ছয় মাস মেয়াদী এবং পরে এক বছর মেয়াদী কমিটি গঠন এবং কেন্দ্রীয়, বিশ্ববিদ্যালয়, মহানগর ও কলেজের সমন্বয়ে কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছিল ওই তিন দাবিতে।
এ বিষয়ে বিএনপির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, সাবেক ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধ এসব নেতাদের ওপর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মনক্ষুন্ন। উনি সরাসরি বলেছেন, ছাত্রদলের দাবি মানা সম্ভব নয়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে বয়সসীমা তুলে দেওয়ার যে দাবি বিক্ষুব্ধ নেতারা তুলেছেন, এই দাবি মানাটা দলের পক্ষে কষ্টকর। কারণ অন্যায় দাবি তো মানা সম্ভব না কারও পক্ষে।
গত ৩ জুন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রদলের মেয়াদোত্তীর্ণ কেন্দ্রীয় কমিটি বাতিল করা হয়। এতে বলা হয়, আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে কাউন্সিলদের মতামতের ভিত্তিতে সংগঠনটির নতুন কেন্দ্রীয় সংসদ গঠন করা হবে।
ছাত্রদলের অনুষ্ঠিতব্য কাউন্সিলে প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতার বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ছাত্রদলের প্রাথমিক সদস্য হতে হবে। অবশ্যই বাংলাদেশে অবস্থিত কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র হতে হবে। কেবল ২০০০ সাল থেকে পরবর্তীতে যে কোনো বছরে এসএসসি অথবা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
সর্বশেষ ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয় ২০১৪ সালের অক্টোবরে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দুই বছর পর পর নতুন কমিটি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রায় ৫ বছর অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত ছাত্রদলের নতুন কমিটি করা হয়নি।