‘বাজেটের টাকা দিয়ে মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম কানাডায় বেগম পাড়া তৈরি হয়’!
প্রকাশিত হয়েছে : ৫:২৫:১৭,অপরাহ্ন ১৬ জুন ২০১৯ | সংবাদটি ৮৯৩ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: বিএনপির সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা বলেছেন, জাতীয় বাজেটের টাকা কোথায় যায়, কার হাতে যায় তার তালিকা প্রকাশ করা হোক। এ টাকা দিয়ে মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম তৈরি হয়। এ টাকায় কানাডায় বেগম পাড়া তৈরি হয়। পানামা পেপারে নাম আসে কিন্তু বিচার হয় না। এ দেশে গরিবের সোনা তামা হয়ে যায়। পাথর চুরি হয় যায় কিন্তু বিচার হয় না।
রবিবার (১৬ জুন) একাদশ জাতীয় সংসদের ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটের আলোচনায় অংশ নিয়ে রুমিন আরো বলেন, আমি আমার দলের (বিএনপি) কথা বলব। তারা তাদের কথা বলবেন। কিন্তু আমি দাঁড়ালেই পুরো সংসদ উত্তেজিত হয়ে যায়, ৩শ এমপি মারমুখী হয়ে যান; তবে আমার বক্তব্য কীভাবে রাখব?
এ সময় সভাপতির দায়িত্বে থাকা ডেপুটি স্পিকার অ্যাড. ফজলে রাব্বী বলেন, আপনাকে অনুরোধ করব, এমন কথা বলবেন না যা অপর পক্ষ উত্তেজিত হবে এবং সংসদ পরিচালনায় সমস্যা তৈরি হবে।
এরপর রুমিন ফারহানা বলেন, সংসদে আমরা (বিএনপি) আসার সময় সংসদ নেতা বলেছিলেন, আমাদের কথাগুলো আমরা বলতে পারব। এমপিরা তা ধৈর্য নিয়ে শুনবেন। আমি প্রথম দিন দুই মিনিটের বক্তব্য ১ মিনিটও শান্তিতে দিতে পারিনি। আজও একই ঘটনা ঘটল। এমন হলে আমরা কোন গণতন্ত্রের কথা বলি, কোন বাকস্বাধীতার কথা বলি, কোন সংসদের কথা বলি? সংসদ তো এভাবে চলতে পারে না।
সম্পূরক বাজেট সম্পর্কে তিনি বলেন, একটা সরকারের সক্ষমতা ক্রমশ বাড়ার কথা। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি এ সরকারের সক্ষমতা ধীরে ধীরে কমে আসছে। বাজেটের মাত্র ৭৬ শতাংশ আমরা বাস্তবায়ন করতে পারি। যে রাজস্ব আদায়ের বিশাল লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় সেই রাজস্ব আমরা কখনই আদায় করতে পারি না।
নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এ নির্বাচন কমিশন কী ধরনের নির্বাচন করেছে- স্থানীয় সরকার নির্বাচন থেকে জাতীয় নির্বাচন পর্যন্ত তা স্পষ্ট হয়ে গেছে। কী ধরনের নির্বাচন হয়েছে, এখানে যে সদস্যরা রয়েছেন তারা আল্লাহকে হাজির নাজির করে বলুক সংবিধান অনুযায়ী জনগণের প্রত্যেক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন কি না।
তিনি বলেন, তারা কয়জন জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন, নিজের বিবেককে প্রশ্ন করুক। যদি বিবেক থেকে থাকে আপনাদের নিজেদের উত্তর নিজেই পেয়ে যাবেন। কী ধরনের নির্বাচনের মাধ্যমে এ সংসদে এসেছেন। আমাদের কথা দেওয়া হয়েছিল, এ সংসদে আমাদের কথা বলতে দেওয়া হবে। এ জন্য এ সংসদ নির্বাচিত নয় জেনেও আমরা সংসদে যোগ দিয়েছি। কারণ, আমাদের মিটিং করতে দেওয়া হয় না। ভেবেছিলাম সংসদে জনগণ, আমার দল নিয়ে কথা বলতে পারব। কিন্তু আমার দুর্ভাগ্য এ সংসদের সরকারি দলের এমপিদের এতটুকু ধৈর্য নেই আমার কথা শোনার।
রুমিন ফারহানা বলেন, দেশে আইন আছে, আদালত আছে। কিন্তু আইনের শাসন নেই। সে কারণে মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে গত এক বছরে বিচারবর্হিভূত ৪৫০টি হত্যা হয়েছে। এ বিচারবর্হিভূত হত্যা কত জঘন্য ঘটনা, কোনো সভ্য রাষ্ট্রে তা চলতে পারে না। মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের রিপোর্ট মতে, গত এক দশকে গুম হয়েছে ৬শ’ এর উপরে। আমার সুযোগ হয়, এ গুম হওয়া পরিবারের সঙ্গে বসার। তারা এখন শুধু লাশ চায়, যাতে একটু কবর দিতে পারে।
তিনি আরও বলেন, গত এক মাসে মৃত্যু উপত্যকা বাংলাদেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে ১৬৮টি। বাংলাদেশ এখন ধর্ষণের রঙ্গমঞ্চ। আমার দুঃখ লাগে স্পিকার এ সংসদের একজন নারী এমপিও এ নিয়ে কথা বলেন না। বাংলাদেশে এখন এক বছর থেকে শুরু করে ১০০ বছরের বৃদ্ধাও ধর্ষিত হচ্ছে। কিন্তু কোনো বিচার হয় না। কোনো না কোনোভাবে ক্ষমতার সঙ্গে যুক্ত বা সুবিধাভোগী তারাই এ ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত।