গীতিকবি রুহুল আমিন রুহেলের গীতিকাব্য পঞ্চরঙ্গ গ্রন্থের পাঠ প্রতিক্রিয়া
প্রকাশিত হয়েছে : ৭:০৭:২৪,অপরাহ্ন ০৯ এপ্রিল ২০১৯ | সংবাদটি ৭৮৬ বার পঠিত
শামীম আহমদ, লন্ডন থেকে :
যাঁরা মাঠে সোনালী ফসলের কারিগর তাঁদের আমরা কৃষক বলি। যিনি অক্ষর আর শব্দ নিয়ে সারাদিন মেতে থাকেন তিনি হলেন শব্দকৃষক। আমাদের বিলেতে যাঁরা লেখালেখি করেন রুহুল আমিন রুহেল তাদের মধ্যেই একজন সার্থক শব্দকৃষক।
অঘ্রাণের ধানের মাঠে তাকিয়ে হলুক কাঁচা সোনার মতো ঝলমলে রঙ চোখে পড়লেই যেনো মনে হয় ছড়ার সবকটি ধানই পাকা সোনায় মোড়ান, যদিও নিচের অংশে কিছু ধান অপুষ্ট থেকেই যায় সেটা প্রকৃতির নিয়ম আমরা এড়াতে পারি না কখনোই। এমনিভাবে পড়তে থাকি একটি গীতিকাব্য গ্রন্থ। যদিও সব কবিতা গান হয় না কিন্তু সব গানই কবিতা তাই গীতিকাব্যই বলবো এতে রস আছে সুধার মতো হৃদয়ের নির্যাস আছে।
যখন বইটি চোখের সামনে মেলে ধরি পাঠ করি তখন হৃদয়ের কোথায় যেনো কাব্যের মাদকতা আমাকে মোহমান্নিত করে মনের অজান্তে, জাগতিক প্রেম আর ঐশ্বরিক প্রেমের মেলবন্ধন ভাবনার অতল তলে তলিয়ে দেয় আমাকে। ঠ
যে বৃক্ষের রসে এমন মাদকতা নির্দ্ধিধায় বলা যায় সেই বৃক্ষ পরিপক্ষ পরিপূর্ণতায় ছুঁয়েছে আকাশ। এখানে আমি বলবো কাব্যধ্যানের মুল্যায়ন রসে পাওয়া যায় ।
রুহুল আমিন রুহেলের পরিচয় মিলে
রোমান্টিকতায় জীবন দর্শন আর ঈশ্বর প্রেমের ধর্মীয় মুল্যবোধের। পঞ্চরঙ্গ বইয়ের ৫১ পৃষ্টায় ৪৬ নম্বর গান -‘আমি যারে ভালবাসি এই বুকে ঠাঁই দিয়েছি
সাজিয়েছি যাঁরে ফুলে ফুলে।’
বাহ কী অনিন্দ্য কথা ; তারপর
‘স্বার্থের তাগিদে আসে
মনের টানে কেউ আসে না।’
এই দুটি লাইন নিয়ে চিন্তা করলে একটি মহাকাব্য রচনা করা যায় যদিও সহজ সরল কথা তবুও তার ভাব সুদূর প্রসারিত ;
তারপর আসি জাগতিক প্রেমের কথার
তিনি লিখেছেন-
‘নিয়তির পরিহাস কত ভাঙা গড়া
ছেড়ে দিলে হাত আর দিলে না সাড়া।’
এখানে চরম বিরহ কাজ করেছে তাঁর যে না পাওয়ার এক তীব্র যন্ত্রনা এখানেই ফুটে উঠেছে। সব চারণ কবিই মনে হয় বিরহি হন এটাই প্রমান করলেন রুহুল আমিন রুহেল।
লক্ষ মানুষের না বলা কথা সহজ ভাষায় অসাধারণ প্রকাশ করা কিন্তু মুখের কথা নয় ।
১৩ নম্বর পৃষ্টায় ৫ নম্বর গানে কবি লিখেছেন, ‘আর কত সাজাইতাম আমি কল্পনায় বাসর বন্ধু দিলে না আদর।
আরিপরি আপন হইল আমি হইলাম পর।’
একেবারেই সাদামাটা দুটো চরণ কিন্তু এর গভীরতা অনেক.
বিরহের চরম পর্যায়ে পৌছলে এমন কথা লিখা যায় যিনি ঈশ্বরের প্রেমের সাগরে মুক্তা কুড়াতে বদ্ধপরিকর ;
তিনি আরো লিখেছেন,
‘তোমাকে পাবো কিনা পাবো
চাতকি পাখির মতো তৃষ্ণায় আকুলিত
কতকাল আমি চেয়ে চেয়ে থাকবো।’
ভাবুকের মন এভাবেই তাঁর মনে মনি কোটায় প্রিয়জনকে স্থান দেয়,
কবিও এর বাইরে নন কারণ তিনি
একজন কবি।
সবাই তাঁকে গীতিকার বলে আমি কবিই বলবো।
পরিশেষে এটুকুই বলতে চাই গীতিকাব্য গ্রন্থটি বহুল পাঠ প্রিয়তা পাক মানুষের মনে মনিকোটায় স্থান করে নিক তাঁর পঞ্চরঙ্গ চমৎকার হয়েছে। বইটি লিখন প্রকাশন থেকে প্রকাশ হয়েছে ২০১৯ বই মেলায়
প্রচ্ছদ করেছেন আইয়ুব আলামিন
বইটির মুল্য ধরা হয়েছে ১৮০টাকা ।
শামীম আহমদ
লন্ডন ৬,৪,১৯ ।