পিলখানা হত্যা নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করবেন না: কাদের
প্রকাশিত হয়েছে : ১০:৩১:৫৮,অপরাহ্ন ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | সংবাদটি ৬৮৮ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: বিডিআর বিদ্রোহে পিলখানায় যে ট্রাজেডি ঘটেছে সেটা নিয়ে বেশি ঘাঁটাঘাঁটি না করতে বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচারের ঘোষণার জবাবে তিনি বলেছেন, এটা নিয়ে কেঁচো খুঁড়তে গেলে বিশধর সাপের মতো বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমানের সম্পৃক্ততা বেরিয়ে আসবে।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় জাদুঘরে শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের ৩২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সর্বশেষ ২৫ ফেব্রুয়ারি সেই পিলখানা ট্রাজেডি, পিলখানা ট্রাজেডি নিয়ে বিএনপি এখনো মিথ্যার বেসাতি পড়ে যাচ্ছে। বিএনপির মহাসচিব বলেছেন, তারা ক্ষমতায় এলে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচার করবেন। আমি বলতে চাই, এত লোকের বিচার, এত দ্রুতবিচার দুনিয়ার ইতিহাসে নজিরবিহীন। যা শেখ হাসিনা করেছেন। পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচার সারা দুনিয়ার জন্য একটা উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, এমন বিচার দুনিয়ার ইতিহাসে কোথাও হয়নি।’
নতুন করে বিচার করতে গেলে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমানের সংশ্লিষ্টতা বেরিয়ে আসবে দাবি করে কাদের বলেন, ‘ফখরুর সাহেব! নতুন করে বিচার করতে গেলে ওই কেঁচো খুঁড়তে গেলে অনেক বিশধর সাপ বেরিয়ে আসবে। সেই ২৫ ফেব্রুয়ারি, যিনি ১২টার আগে ঘুম থেকে উঠেন না, সেই বেগম জিয়া, সকাল সাতটায় ঘুম থেকে উঠে কোথায় পলায়ন করলেন, দুই দিন ধরে তার কোনো খবর নাই, খোঁজ নাই, হদিস নেই, সেই রহস্য নতুন বিচার করতে গেলে বেরিয়ে আসবে। কেঁচো খুঁড়তে গেলে সাপ বেরিয়ে আসবে।’
‘যিনি দুপুর ১২টার আগে ঘুম থেকে উঠেন না, ভোর পাঁচটা থেকে সাতটা পর্যন্ত তারেক রহমানের সঙ্গে দুই ঘণ্টাব্যাপী ১১ বার টেলিফোনে কী কথাবার্তা হয়েছে। নতুন বিচার করতে গেলে এই রহস্য উদঘাটন করা হবে। কী কথা হয়েছিল মা-ছেলের সেটাও জাতি জানতে পারবে। কাজেই কেঁচো খুঁড়তে গেলে বিশধর সাপ বের করবেন না। এটা নিয়ে যতই ঘাঁটাবেন নিজেরাই জালে পড়বেন। ধরা পড়বেন। এই হত্যাকাণ্ডে আপনাদের সংশ্লিষ্টতা ভালোভাবে উদঘাটিত হবে।’
এরআগে মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) এক অনুষ্ঠানে বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার গভীর সংকটে পড়লে জনগণের দৃষ্টি অন্য দিকে সরাতে দলীয় লোকদের ‘মুখরোচক অপকর্ম’ প্রকাশ করে। এর জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এই দেশে অনেক সরকার ক্ষমতায় এসেছে। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর আমরা একুশ বছর ক্ষমতায় ছিলাম না। এই দেশে ক্ষমতার রাজনীতিতে অনেক অপকর্ম, অনেক অপরাধ, অনেক দুর্নীতি, অনেক সন্ত্রাস, অনেক খুন হয়েছে। কিন্তু এই পর্যন্ত শেখ হাসিনা ছাড়া আর কোনো প্রধানমন্ত্রী, কোনো রাষ্ট্রপতি নিজ দলের লোকদের অপকর্মের বিচার করেননি।’
‘একটা উদাহরণও দেখাতে পারবেন না, শেখ হাসিনা ছাড়া, আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো আমলে নিজেদের দুর্নীতিবাজ, নিজেদের সন্ত্রাসী, নিজেদের খুনি, নিজেদের চাঁদাবাজ, চিহ্নিত ভূমি দখল এসব অপরাধের জন্য কারও বিচার হয়েছে। পাপিয়ার মতো অপরাধীদের বিচার হয়নি। এইসব অপরাধী তাদের মধ্যেও ছিল হাজার হাজার।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শেখ হাসিনাই এই দেশে প্রথম সৎ সাহস দেখিয়েছেন যে, অপকর্ম-অপরাধের বিচার আমি আমার ঘর থেকেই শুরু করলাম। এবং সেই ধারায় পাপিয়ারা গ্রেপ্তার হয়েছে। এখানে মুখরোচক কিছু নেই। মোশাররফ সাহেব, মুখরোচক খবর নয়, পাপের বিচার হবে। অপরাধের বিচার হবে। শেখ হাসিনা কোনো সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, অপরাধী-অপকর্মকারীকে তার দলে প্রশ্রয় দেন না- এটাই প্রমাণ। এই পাপিয়াও বঙ্গবন্ধু কন্যার নির্দেশেই গ্রেপ্তার হয়েছে। আমাদের এখানে অপরাধ করে কেউ পার পাবে না।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘ফখরুল সাহেব, মোশাররফ সাহেব আপনাদের দলে হাজার হাজার খুনি অস্ত্রবাজ দখলদার আড়ালে ছিল। তাদর কোনো দিন অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়নি। তাদের বিচার করা হয়নি। ক্ষমতাসীন দল করে তাদের এমন ভাব ছিল আমাদের গায়ে কেউ আচড় দিতে পারবে না। এবং পার পেয়ে গেছে তারা। আমরা আজ সৎ সাহস দেখাচ্ছি, নিজের ঘরের আপরাধীদেরও আমরা ক্ষমা করছি না। কোনো অপরাধী অপরাধ করে ক্ষমা পাবে না।’
শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মো. রকিবুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।