খালেদা জিয়ার কারাবরণে দুই বছর, সমাবেশ করবে ঐক্যফ্রন্ট!
প্রকাশিত হয়েছে : ১২:১৫:২৯,অপরাহ্ন ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | সংবাদটি ৩৫০ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কারাবাসের দুই বছর হওয়ার প্রতিবাদে ঢাকায় সমাবেশ করবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলে ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক শেষে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
ড. কামাল হোসেনের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট মহসীন রশীদ। তিনি বলেন, আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দুই বছর কারাবাসের প্রতিবাদে ও মুক্তির দাবিতে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে প্রতিবাদ সমাবেশ করবে ঐক্যফ্রন্ট। বেলা ১১টা থেকে এ সমাবেশ শুরু হবে। ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন।
মহসীন রশীদ আরো বলেন, সদ্যসমাপ্ত ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সরকার, নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন প্রক্রিয়ার ওপর যুবসমাজ ও জনগণ অনাস্থা প্রকাশ করেছে। নির্বাচিত মেয়ররা মাত্র পাঁচ থেকে সাত শতাংশ মানুষের রায় পেয়েছে। বাকি ফল ইভিএমের জাল ভোট। বর্তমান সরকারের আমলে গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে। সরকার চায় ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে না যাক। সরকার ভোটারদের ভয় পায়। তাই সরকার নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। জনগণ ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার অর্থ তারা মনে করে তাদের ভোটে এই সরকারের পরিবর্তন হবে না। তাদের জন্য একটা অশনিসংকেত।
এরপর ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘যে নির্বাচন হয়েছে তাকে মোটেই নির্বাচন বলা যাবে না। সরকার দায়িত্বহীনভাবে সংবিধানের পরিপন্থী কাজ করছে। নির্বাচন পদ্ধতি ও প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করেছে। যার ফলে আজকে দেশের ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আমরা এ কথাগুলো জনগণকে বলতে থাকব, বলার দিক থেকে আমাদের কোনো ধরনের কমতি নেই। আমরা বলতে থাকব, মানুষকে জানাতে থাকব। মানুষ একদিন দাঁড়িয়ে বলবে তারা যে কাজগুলো করছে সেটা সঠিক নয়। মানুষ একদম অসহ্য হয়ে গেছে। স্বৈরাচারকে মানুষ কখনোই গ্রহণ করেনি, এখনো করবে না।’
বৈঠকে উপস্থিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, ‘আপনারা সাংবাদিকরা পুরো নির্বাচনে আমাদের সঙ্গে ছিলেন, এ জন্য আপনাদের ধন্যবাদ জানাই। তিন সপ্তাহ পর্যন্ত আমাদের যে ভোটের মাঠে ক্যাম্পেইন ছিল, আপনারা সর্বাত্মক আমাদের সহযোগিতা করেছেন। জনগণ আমাদের সাথে ছিল না, এ ধরনের বক্তব্য সঠিক নয়। আপনাদের ক্যামেরা প্রকাশ করেছে, প্রমাণ হয়েছে জনগণ আমাদের সাথে কীভাবে মাঠে ছিল। উত্তরে বলেন কিংবা পুরান ঢাকায় বলেন, সবখানে মানুষ আমাদের সঙ্গে ছিল। আমরা যখন জনগণের কাছে গিয়েছি, তখন হাজার হাজার মানুষ আমাদের ডাকে সাড়া দিয়েছে। আমাদের দুজন প্রার্থীর সঙ্গে জনগণ একাত্মতা পোষণ করেছে, জনগণ আমাদের সঙ্গে পুরো নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সঙ্গে যুক্ত ছিল। মানুষের জনস্রোতে প্রমাণ হয়েছে আসলে জনগণ কাকে চায়।’
জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে, জনগণের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে ধৈর্যসহকারে রাজনৈতিক দলকে দৃঢ়তার সঙ্গে আন্দোলনে নামতে হবে, অস্থির হলে চলবে না। সময় বলে দেবে কখন কী করতে হবে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট তাই করবে।’
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা ধৈর্যের পরীক্ষা দিচ্ছি। জনগণের অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য এখন থেকে আমরা রাস্তায় পথেঘাটে মিটিং-মিছিল, সব ধরনের সভা কর্মসূচি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মানুষকে আন্দোলন নিয়ে যে আসার কথা বলছে সেটার প্রতিফলন ঘটবে।’
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন বিকল্পধারা বাংলাদেশের একাংশের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নুরুল আমিন বেপারী, গণফোরামের সাবেক নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, মোস্তাক আহমদ, নাগরিক ঐক্যের সমন্বয়কারী শহিদুল্লাহ কায়সার, বিকল্পধারা বাংলাদেশের একাংশের মহাসচিব অ্যাডভোকেট শাহ আহমেদ বাদল, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দপ্তর প্রধান জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু।