পাকিস্তানের ন্যায় সরকার হটানোর হুমকি ফখরুলের!
প্রকাশিত হয়েছে : ৩:১৭:০৯,অপরাহ্ন ১৮ ডিসেম্বর ২০১৯ | সংবাদটি ৪০৭ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: পাকিস্তানি বাহিনী ও স্বৈরাচারের মতো বর্তমান সরকারকেও আন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতা থেকে হটানো হবে বলে হুমকি দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সরকার পতনের আন্দোলনে সবাইকে শরিক হওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকালে মহানগর নাট্যমঞ্চে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় নেতারা এই হুঁশিয়ারি দেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘যেভাবে পাক হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করা হয়েছিল, সেইভাবে আওয়ামী লীগকে আন্দোলনের মাধ্যমে সরিয়ে দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা হবে। এই আন্দোলনে সবাইকে শরিক হতে হবে।’
বাংলাদেশকে বিরাজনীতিকরণ করার জন্য ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে- এমন অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, ‘তাদের (আওয়ামী লীগ) ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার জন্য খালেদা জিয়াকে আটকে রাখা হয়েছে। অতীতে যেভাবে স্বৈরাচারের পতন হয়েছে, আগামী দিনে একইভাবে স্বৈরাচারের পতন ঘটানো হবে।’
‘ওপরের নির্দেশে আজকে সব স্তব্ধ হয়ে যায়’- এমন মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, ‘ওপরের নির্দেশে বিচারক খালেদা জিয়ার রায় দেন। বিচার বিভাগ স্বাধীন নয়। ৪৮ বছর পর আজকে আমাদের এ কথা বলতে হচ্ছে। আওয়ামী লীগ মানুষের স্বাধীনতা বিশ্বাস করে না। শুধুমাত্র তাদের উন্নয়নে বিশ্বাস করে।’
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আজকে দেশের স্বাধীন ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে আমরা চিন্তিত। মেরুদণ্ডহীন সরকার কোনো প্রতিবাদ করতে পারছে না। ভারত এনআরসির মাধ্যমে বাংলাদেশকে বিপদগ্রস্ত করছে। সরকার কোনো প্রতিবাদ করতে পারছে না।’বিজয় দিবসের আলোচনার থেকে খালেদা জিয়ার মুক্তি শপথ নিতে নেতাকর্মীদের আহ্বান জানান মোশাররফ।
ভারতের এনআরসি বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমরা ভারতকে শত্রু মনে করি না। কিন্তু তাদের কথা বার্তায় মনে হয় তারা আমাদের শত্রু মনে করে। তারা বাংলাদেশে শুধু আওয়ামী লীগের বন্ধু।’
এনআরসির পদক্ষেপ আর মিয়ানমারের পদক্ষেপ একই দাবি করে এ নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থা নিয়েও প্রশ্ন তুলেন গয়েশ্বর। তিনি বলেন, ‘এটা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়, অন্য দেশের জাতীয় স্বার্থে আঘাত লাগলে অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে চাপা দেয়া যাবে না। আমাদের প্রতিবাদ করতে হবে।’
স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, ‘যে গণতন্ত্রের জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল, কেন আজকে সেই গণতন্ত্র অপসারিত হয়ে স্বৈরতন্ত্র কায়েম হয়েছে? এই সরকারকে তার জবাব দিতে হবে।’
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘গত ১০ বছরে দেশের মানুষের কোনো বিনিয়োগ হয়নি। উচ্চ সুদে বিদেশিদের বিনিয়োগ হয়ে। শুধু ফ্লাইওভার হয়েছে। দেশের মানুষের কোনো উন্নয়ন হয়নি।’
খালেদা জিয়ার কারারুদ্ধ সম্পর্কে মঈন খান বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে আটকে রাখা হয়ছে। বিএনপির সৈনিকেরা বুকে রক্ত দিয়ে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনবে।’
আরও বক্তব্য দেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, আবদুস সালাম, যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবীব-উন-নবী খান সোহেল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, ঢাকা মহানগর উত্তরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এজিএম শামছুল হক প্রমুখ।
এছাড়া অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের মধ্যে বক্তব্য দেন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা রহমান, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন প্রমুখ।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী ও সহ প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলীম।