যে কোন সময় গ্রেফতার যুবলীগ নেতা সম্রাট!
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:২৭:৪২,অপরাহ্ন ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | সংবাদটি ১০৯০ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভুইয়াকে অস্ত্রসহ আটকের পর যুবলীগে শুরু হয়েছে শুদ্ধি অভিযান। দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটও এ শুদ্ধি অভিযানে যে কোন সময় গ্রেফতার হতে পারেন।
গেল ২০১২ সালের পর ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের হাত ধরে উত্থান ঘটনে গ্রেপ্তারকৃত মহানগর দক্ষিন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদের। আর তার হাতে আসে ঢাকার এক অংশের কর্তৃত্ব। পরবর্তীতে রিয়াজ মিল্কি ও তারেক হত্যার পর পুরো এলাকা নিজের নিয়ন্ত্রণে নেন খালেদ।
এদিকে, শুরু হয় মতিঝিল ক্লাবপাড়ার জুয়া, টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসা, পরিবহন চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে ভবন দখল ও নিজের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার জন্য খালেদের ক্যাডার বাহিনীর ত্রাসের রাজত্ব। রিয়াজ মিল্কি ও তারেক হত্যার পর পুরো এলাকা নিজের নিয়ন্ত্রণে নেন খালেদ।
শুদ্ধি অভিযানের অংশ হিসাবে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ যুবলীগের দুটি কমিটি ভেঙে দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটসহ ঢাকা মহানগরের একাধিক নেতা যে কোনও সময় গ্রেফতার হতে পারেন। এমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছেন আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতা। আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতা বলেন, যুবলীগের সম্রাটসহ ঢাকা মহানগর যুবলীগে একাধিক নেতার বিরুদ্ধে বেপরোয়া চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিসহ নানা বিষয়ে অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী জানান, যুবলীগের ঢাকা দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট ও সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে সংগঠনের ট্রাইব্যুনালে ডাকা হচ্ছে। এ ছাড়া কমিটিতে থাকা নিম্ন পর্যায়ের আরও কয়েকজন যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধেও নানা রকম অভিযোগ রয়েছে। তাদেরও ট্রাইব্যুনালে ডাকা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে ওমর ফারুক।
গোয়েন্দা সূত্র থেকে জানা যায়, ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের বিরুদ্ধে আনা নানা অভিযোগের একটি প্রতিবেদন এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘ঢাকা মহানগরীর চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, মাদক নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হচ্ছে না ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট ও তার কিছু লোকজনের দৌরাত্ম্যে। এ বিষয়ে যাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হয় তার অনুরোধ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
গত শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রী গণভবনে আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে ছাত্রলীগের দুই শীর্ষ নেতার সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশের পর যুবলীগ নিয়েও আলোচনা করেন। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে যুবলীগের দোয়া অনুষ্ঠান ও যুব জাগরণ সমাবেশের প্রসঙ্গ আসলে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন চাঁদাবাজির টাকা হালাল করার জন্যই এমন আয়োজন করা হয়েছে। এরপর তিনি বলেন, ঢাকা মহানগর যুবলীগের একজন নেতা চার থেকে পাঁচজন দেহরক্ষী নিয়ে চলাফেরা করেন।বড় বড় অস্ত্র নিয়ে তার চারপাশে অবস্থান করে। এ সব দেখলে মানুষের কী ধারণা হয়। তাছাড়া আওয়ামী লীগ এখন ক্ষমতায়। এখন কেন ওই নেতা এত নিরাপত্তাহীনতায় আছেন?
এমন যুবলীগের দোয়ার কোনও প্রয়োজন নেই জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে বলেছেন, কিছুতেই এসব অপকর্ম সহ্য করা হবে না। অস্ত্রবাজি ও ক্যাডার রাজনীতি চলবে না। যে কোনও মূল্যে এই অপরাজনীতির অবসান ঘটাতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বলা হয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রী গত ৭ সেপ্টেম্বর (শনিবার) গণভবনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ড ও স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের যৌথ বৈঠকে দলের শীর্ষ নেতাদের একটি ছবি দেখান। ওই ছবিতে সশস্ত্র ব্যক্তিদের প্রহরায় যুবলীগের একজন নেতাকে দেখা গেছে।
ওই বৈঠকে আওয়ামী লীগ নেতারা যুবলীগের কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে জুয়ার আড্ডায় অংশ নেয়ার অভিযোগ আনেন। প্রতিদিনই সংশ্লিষ্ট নেতারা ক্যাসিনোতে আড্ডা মারেন বলেও অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতারা।