সারা দেশে আ’লীগের নিজস্ব মালিকানায় হচ্ছে দলীয় কার্যালয়!
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:০১:৫৬,অপরাহ্ন ০১ আগস্ট ২০১৯ | সংবাদটি ৩২৬ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: আওয়ামীলীগের সংগঠনিক কার্যক্রম আরো মজবুত ও সুসংহত করার অংশ হিসেবে সারাদেশে নিজস্ব মালিকানায় দলীয় কার্যালয় প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে জেলা ও উপজেলার তৃণমূল পর্যায়ে এ বিষয়ে দুই দফা চিঠি দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে নিজস্ব মালিকানায় স্থায়ী কার্যালয় স্থাপনের জন্য জমি চূড়ান্ত করাসহ অন্যান্য তথ্য কেন্দ্রকে জানাতে বলা হয়েছে। আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ইতোমধ্যেই রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে নিজ মালিকানার জমিতে বহুতল ভবন নির্মাণ করে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় গড়ে তোলা হয়েছে।
সূত্র জানায়, ২০১৭ সালে দলের বর্ধিত সভায় প্রথম এই প্রস্তাব তোলা হয়। এর ধারাবাহিকতায় কার্যনির্বাহী সংসদের একাধিক বৈঠকে আলোচনার পর এ প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হয়। এ বছরের জানুয়ারিতে এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে প্রথম দফায় তৃণমূলে চিঠি দেওয়া হয়। গত ২০ জুন কার্যালয় প্রতিষ্ঠার বিষয়ে অগ্রগতি জানতে চেয়ে আরেক দফা চিঠি পাঠানো হয়। এসব চিঠিতে দলের সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী সারাদেশে জেলা, মহানগর ও উপজেলা পর্যায়ে দলের নিজস্ব জমি রয়েছে কিন্তু নিজস্ব কার্যালয় নেই, নিজস্ব জমিও নেই, নিজস্ব কার্যালয়ও নেই, সে সম্পর্কে তথ্য জানতে চাওয়া হয়। জমির মালিকানার বিবরণসহ কার্যালয়ের ঠিকানা ও ফোন নম্বর কেন্দ্রে পাঠাতে বলা হয়েছে এ দুটি চিঠিতে। এছাড়া, অস্থায়ী কার্যালয়ের ঠিকানা ও ফোন নম্বর, অস্থায়ী কার্যালয়টি ভাড়ার হলে তার বিবরণ, কার্যালয় না থাকলেও তার বিবরণ পাঠাতে বলা হয়েছে। স্থায়ী-অস্থায়ী কার্যালয়, কম্পিউটার ইন্টারনেট সম্পর্কিত বিবরণও লিখে পাঠাতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে যেসব এলাকায় নিজস্ব জমি নেই তাদের নিজস্ব জমি কেনার জন্য আহ্বান জানানো হয়।
আওয়ামী লীগের উপদফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া গণমাধ্যমকে জানান, ৭৩টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে এরইমধ্যে ৪০টির বেশি জেলা থেকে চিঠির জবাব এসেছে। বাকিগুলোরও পর্যায়ক্রমে আসবে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘সব তথ্য পাওয়ার পর পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।’
জানা যায়, মূলত আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ইচ্ছাতেই এ উদ্যোগ শুরু হয়। টানা তিনবার ক্ষমতায় থাকায় সংগঠন যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সাংগঠনিকভাবে দল যেন দুর্বল না হয়, সেটি বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘দলকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর অন্যতম একটি হলো সারাদেশের নেতাকর্মীদের ডাটাবেজ তৈরি করা এবং সারাদেশের সব শাখায় নিজস্ব মালিকানায় দলীয় কার্যালয় করা।’ তিনি জানান, ডাটাবেজ তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আর দলীয় কার্যালয় করার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। হানিফ বলেন, ‘দলকে গতিশীল রাখার লক্ষ্যে গত কয়েক বছরে নিয়মিত সম্মেলন সম্পন্ন করা হয়েছে।’
উল্লেখ্য, গত কয়েক বছর ধরেই আওয়ামী লীগ মূল দলের পাশাপাশি সহযোগী এবং ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোকে গতিশীল করার উদ্যোগ নিয়ে আসছে। এর অংশ হিসেবেই ছাত্রলীগের নেতৃত্বে বয়স বেঁধে দিয়ে ছাত্রদের হাতেই নেতৃত্ব রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের নিয়ম মেনে সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন আলাদা করা হয়েছে। প্রতিটি সংগঠনের নিয়মিত সম্মেলন করার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। যদিও দীর্ঘদিন ধরেই যুবলীগ, কৃষক লীগ এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের মেয়াদ পার হলেও সম্মেলন আটকে আছে।
তবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান দাবি করেন, পর্যায়ক্রমে সব সংগঠন নিয়মের মধ্যে চলে আসবে। সম্মেলনের পাশাপাশি অন্যান্য কার্যক্রমও যথানিয়মে অনুষ্ঠিত হবে।