এরশাদকে শেষ শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন উত্তরাঞ্চলবাসী
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:২১:১১,অপরাহ্ন ১৬ জুলাই ২০১৯ | সংবাদটি ৩৫৫ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: সাবেক রাষ্ট্রপতি, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে শেষ শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন তাঁর নিজ এলাকা রংপুরবাসী।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সোয়া ১২টার দিকে রংপুর ক্যান্টনমেন্টে থেকে মরদেহবাহী গাড়ি কালেক্টরেট মাঠে পৌঁছালে সেখানে এক হৃদয় বিদারক অবস্থা বিরাজ করে। নেতাকে একনজর দেখতে সমাগম ঘটেছিলো লাখো জনতার। বাদ জোহর কালেক্টরেট মাঠে সর্বশেষ চতুর্থ জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। জানাযায় শুধু রংপুর নয় উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ছাড়াও সর্বস্তরের মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
বর্তমানে এরশাদের মরদেহ ঢাকা সামরিক কবরস্থানে নিয়ে আসার প্রস্তুতি চলছে।
সেনানিবাস থেকে চতুর্থ জানাজার জন্য মরদেহ আনা হয় কালেক্টরেট মাঠে। এখানেই বাদ জোহর তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজার জন্য সকল প্রস্তুতি আগেই সম্পন্ন করে প্রশাসন। সকাল থেকে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন স্থান থেকে দলে দলে লোকজন জানাজায় শরিক হতে ঈদগাহ মাঠে আসতে শুরু করেছে।
এর আগে, সকাল ১১টা ৫০ মিনিটে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মরদেহ রাজধানীর তেজগাঁওয়ে পুরাতন বিমানবন্দর থেকে রংপুর ক্যান্টনমেন্টে নেওয়া হয়।
সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদের মরদেহবাহী কফিনের সঙ্গে যান তার ভাই ও জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিএম কাদের, এরশাদের ছেলে রাহগির আল মাহি সাদ, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা, সাবেক মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, মেজর (অব.) খালেদ আখতার, আজম খান, এটিইউ তাজ রহমান ও শফিকুল ইসলাম সেন্টু।
রংপুরের উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে এরশাদের ছোট ভাই ও পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের বলেন, আজ দুপুরে রংপুরে নামাজে জানাজা শেষে রাজধানীর বনানীতে সেনা কবরস্থানেই সমাহিত করা হবে বিরোধীদলীয় নেতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে। উনার শেষ ইচ্ছানুযায়ী বনানীতে সেনাবাহিনীর কবরস্থানেই তাকে সমাহিত করা হবে। এই কবরস্থান সেনানিবাস এলাকায় হলেও যেকোনো সময় যে কেউ সেখানে যেতে পারেন।
এ দিকে সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদের স্মৃতিবিজড়িত রংপুরের নেতাকর্মীরা তাকে সেখানেই সমাহিত করার দাবি জানিয়ে আসছেন। ইতোমধ্যে এরশাদের রংপুরের বাড়ি পল্লীনিবাসের লিচুবাগানে তারা দাফনের জন্য কবরও খুঁড়ে রেখেছেন।
রংপুরে দাফনের প্রসঙ্গে দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, এইচ এম এরশাদ স্যার পল্লীনিবাস থেকেই রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছিলেন। একটি নতুন বাড়িও নির্মাণ করছিলেন। কিন্তু সেই বাড়িতে উঠতে পারেননি। তাকে পল্লীনিবাসে সমাহিত করে আমরা একটি স্মৃতি কমপ্লেক্স তৈরি করব। সেখানে এরশাদের জীবন দর্শন নিয়ে একটি মিউজিয়াম করা হবে। মসজিদ-মাদ্রাসা কমপ্লেক্স থাকবে। তার সমাধিকে ঘিরে তার জীবন ও কর্মের চেতনার বাতি আমরা দেশে-বিদেশে জ্বালিয়ে দিতে চাই। তার অবর্তমানে তার ভাই জিএম কাদেরের নির্দেশনার আলোকে আমরা জাতীয় পার্টিকে এগিয়ে নিতে চাই। এজন্য সকল প্রস্তুতি আমরা নিয়েছি।
প্রসঙ্গত, রবিবার (১৪ জুলাই) সকালে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন এরশাদ। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। তিনি রক্তে সংক্রমণসহ লিভার জটিলতায় ভুগছিলেন।
রবিবার বাদ জোহর ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট কেন্দ্রীয় মসজিদে তার প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সোমবার সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটের দিকে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় দ্বিতীয় এবং বাদ আসর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম মসজিদে তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।