মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক আনোয়ার শাহজাহান’র ‘গোলাপগঞ্জের ইতিহাস ও ঐতিহ্য’
প্রকাশিত হয়েছে : ১০:৫৭:৫৬,অপরাহ্ন ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১ | সংবাদটি ৭১৮ বার পঠিত
এডভোকেট শেখ আখতার উল ইসলাম:
জন্মভূমি। একটি শব্দ। অসীম অনুভূতি আর আবেগ মিশ্রিত উচ্চারণ। এজন্য জন্মভূমির প্রতি মানুষের ভালোবাসা অসীম, অপরিমেয়। একজন প্রকৃত সন্তান তার পিতা-মাতার প্রতি ভালোবাসা যেমন নির্ণয় করার কোনো উপায় নেই। তেমনি একজন দেশপ্রেমিক মানুষের অন্তরে দেশের জন্য লুকায়িত ভালোবাসাকে পরিমাপ করা কখনো সম্ভব নয়। প্রকৃত সন্তান পিতা-মাতার সামান্য কষ্টও বরদাশত করতে পারে না। তাঁদের বিপদে সে নিজের সর্বস্ব দিয়ে প্রচেষ্টা চালায়। শুধুমাত্র তাদেরকে একমুঠো সুখ আর ভালোবাসা দেওয়ার জন্য। শৈশব, কৈশোর কিংবা জীবনের প্রতিট পড়ন্ত বেলায় সন্তানের প্রতি পিতা মাতার যে স্নেহ, পরম মমতা ছিল তা তাকে ভাবায়, আবেগে বিহব্বলিত করে। প্রকৃত সন্তান এর মূল্য বুঝে, মূল্য দেয়। কখনো তাদেরকে দূরে ঠেলে দেয় না। তখন পিতা-মাতার সুখই সন্তানের সুখ হয়ে যায়। অপরদিকে সন্তানের প্রতিও পিতা-মাতার মমতার কোনো হিসাবরেখা চলে না। একটি রূপক অর্থে বলা যায়, দেশপ্রেমিকের ভেতরে দেশের জন্য লুকায়িত ভালোবাসা সেই রকমই। তাই তো দেশের জন্য যেকোনো সময় নিজেদের জীবন বিলিয়ে দিতে পারে। যার প্রমাণ আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং বিভিন্ন সময় দেশের জন্য সংগঠিত আন্দোলনে পেয়েছি। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন সংগ্রামেও দেশপ্রেমিকরা তাদের সোনালি জীবনকে বিলিয়ে দিয়েছে। যে মাটির পরতে পরতে তাদের স্মৃতির ধূলো মেশানো তাকে কী ভুলা যায়? না যায় না। বরং সময়ের ব্যবধানে তার আকর্ষণ বাড়তেই থাকে। প্রবাসী সাংবাদিক, গবেষক, লেখক ও সংগঠক আনোয়ার শাহজাহান’র ক্ষেত্রেও ঠিক তেমনই।
একটা জাতি, একটি দেশ কখন গর্বের বিষয় হয়? কখন অহংকারের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়? এর উত্তর একটাই- একটা জাতি কিংবা দেশের মধ্যে যখনই মহৎ মানুষের জন্ম হয়, তখনই তা শ্রেষ্ঠ হয়। যখন একটি জাতির জাতিসত্তা তাদের মাথার উপর বিশাল ছায়া হয়ে যায়। সেই জাতিসত্তাকে ধারণ করেই এগিয়ে যায় তারা। অন্যায় কিংবা অসত্যের কাছে তারা আপোস করে না। ভারতীয় উপমহাদেশ ভঙ্গ পরবর্তী সময়ে তার বাস্তব প্রমাণ লক্ষ করা গেছে। বাংলাদেশের আধ্যাত্মিক রাজধানী খ্যাত সিলেটের গোলাপগঞ্জেও জন্মেছিলেন অনেক কীর্তিমান ব্যক্তিত্ব। যাদের পদচারণায় গোলাপগঞ্জ বাংলাদেশের মধ্যে স্থান করে নেয় সম্মানজনক আসন। এছাড়াও মুক্তিযুদ্ধ পূববর্তী, পরবর্তী এবং বিভিন্ন সময়ে গোলাপগঞ্জের ব্যক্তিত্বরা রেখেছিলেন অসামান্য অবদান। ব্রিটিশ শাসনামলে থেকে হাল আমল পর্যন্ত ইতিহাসের কালখণ্ডে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, দেশভাগ, ভাষার লড়াই, স্বাধীনতাযুদ্ধ, স্বাধীনতা-উত্তর রাজনীতির নানা বাঁক পরিবর্তন, সাহিত্যসাধনা, শিক্ষার প্রসার, সাংবাদিকতা, ধর্মচর্চা প্রতিটি ক্ষেত্রে গোলাপগঞ্জবাসীদের রয়েছে ঐতিহাসিক মূল্যায়ন এবং অবদান। ইতিহাসের নানা প্রেক্ষাপট থেকে শৈল্পিক আলয়ে নিষ্ঠাবান সাংবাদিক গবেষক আনোয়ার শাহজাহান এসব বিষয় উপস্থাপনা করেছেন যা তাঁর নির্মাণকৌশলীর পরিচায়ক। তিনি তাঁর গবেষণার পরতে পরতে রেখেছেন ব্চিক্ষণতা এবং প্রজ্ঞার ছাপ। যা তাঁকে ইতিহাসের অংশ হিসেবে বিবেচিত করেছে। মাটির গভীর থেকে তিনি মণি-মুক্তার মত বের করেছেন অজানা ইতিহাস।
সাংবাদিকতা ব্চিক্ষণ মানুষকে দেয় অনুসন্ধানী দৃষ্টি। দূরবীক্ষণ যন্ত্রের মাধ্যমে দূরের জিনিস কাছে দেখা যায়। আবার অণুবীক্ষণ যন্ত্রের মাধ্যমে অণু বা ক্ষুদ্রতম জিনিস বৃহৎ দেখা যায়। সাংবাদিকদের অনুসন্ধানী চোখে শেকড়ের ভেতরের তথ্যমালাও সন্নিবেশ চোখে ধরা দেয়। আনোয়ার শাহজাহান’র সন্নিবেশ চোখ একেবারেই স্বতন্ত্র ভূমিকায়। সেই স্বাতন্ত্র্যতা শুধুমাত্র মাত্র ইতিহাস-ঐতিহ্যকে কেন্দ্র করে। ইতিহাসের কোনো স্থিরতা নেই। এটা চলমান প্রক্রিয়া। আবহমান কাল থেকেই তথা পৃথিবী সৃষ্টির পর থেকেই অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতকেই নিয়েই ইতিহাস। অতীতই সম্পূর্ণ ইতিহাস, বর্তমান চলমান ইতিহাস আর ভবিষ্যত অনাগত ইতিহাস। সামগ্রিক দৃষ্টিকোণ থেকে যাচাই করলে প্রত্যেকটির সাথে রয়েছে যোগসাজেশ। একটিকে ছাড়া অপরটি কল্পনা করা যায় না। শরীরের প্রতিটি অঙ্গের সমন্বয়ে যেমন একটি মানবসত্তা গঠিত হয়, তেমনি ইতিহাসের প্রধান উপাদান অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ। ‘গোলাপগঞ্জের ইতিহাস ও ঐতিহ্য’ গ্রন্থে আনোয়ার শাহজাহানের নৈর্বক্তিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিস্ফুটিত হয়েছে। সমগ্র গ্রন্থ পাঠ-পর্যালোচনায় এটাই বিবেচ্য, ইতিহাসের মাত্রায় নতুন বাঁক তৈরী করেছেন তিনি। ইতিহাসের ইতিহাস তাঁকে আমরণ স্মরণ করবে।
‘গোলাপগঞ্জের ইতিহাস ও ঐতিহ্য’ গ্রন্থের বিষয়বস্তুকে তিনি চৌদ্দটি অধ্যায়ে ভাগ করেছেন। অধ্যায়গুলোকে পর্যায়ক্রমে উপস্থাপন করা হলো। গোলাপগঞ্জের পরিচিতি ও নামকরণ, উপজেলা পরিষদ ও পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ, শিাব্যবস্থা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্ম প্রচার ও প্রচারক, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা, আন্দোলন সংগ্রামে গোলাপগঞ্জ, সাহিত্যাঙ্গন, সাংবাদিকতার অতীত ও বর্তমান, দর্শনীয় স্থান, প্রবাসে গোলাপগঞ্জবাসী, গোলাপগঞ্জের ব্যক্তিত্ব। সর্বশেষ অধ্যায়ে গবেষক পরিশিষ্ট উল্লেখ করেছেন যা তাঁর গ্রন্থের গ্রহণযোগ্যতাকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রতিটি অধ্যায়ে লেখক যে তথ্য-উপাত্তের অবতারণা করেছেন তা অনুসন্ধানী এবং ভবিষ্যৎ গবেষকদের জন্য দিকনির্দেশনা দেবে। এবং নতুন নতুন গবেষণায় উদ্বুদ্ধ করবে। তাঁর গবেষণাগ্রন্থের রচনাশৈলী, ভাষার মাধুর্যতা, ভাবের প্রকাশ, বাক্য বিন্যাসে ক্ষুদ্রতা, শব্দ চয়নে সহজবোধ্যতা অন্যতম গুণ। শিল্পীর তুলিতে ছবি বা চিত্রপট দর্শকের চোখে যেমন উন্মোচন হয়, আনোয়ার শাহজাহান তেমনই শিল্পীর মতই কাজ করেছেন। অন্বিষ্ট পাঠক অধ্যয়নেই বুঝতে পারবেন তার সার্থকতা। পড়ার মধ্যে পাঠক গোলাপগঞ্জের ইতিহাসের মধ্যে হারিয়ে যাবেন। একটি সামগ্রিক চিত্র ভাসবে চোখের সামনে। এটা লেখকের সবচেয়ে বড় সাফল্য বলা যায় অনিশেষ। ‘গোলাপগঞ্জের ইতিহাস ও ঐতিহ্য’ ও সাংবাদিক আনোয়ার শাহজাহান যেন সার্থক শিল্পীর শিল্পের রং তুলি।
প্রথিতযশা সাংবাদিক, গবেষক, লেখক আনোয়ার শাহজাহানের জন্ম ১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দের ১৬ নভেম্বর গোলাপগঞ্জ উপজেলার ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের রায়গড় গ্রামে। বর্তমানে স্থায়ীভাবে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন। নব্বইয়ের দশকের প্রথম দিক থেকেই যুক্ত হন লেখালেখি ও সাংবাদিকতায়। আনোয়ার শাহজাহান দৈনিক খবর পত্রিকার গোলাপগঞ্জ প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন এবং পরবর্তীতে ১৯৯৪ খ্রিস্টাব্দে গোলাপগঞ্জ প্রেসক্লাব প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। সাংবাদিকদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন, বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে সামাজিক সমস্যা দূরীকরণের প্রত্যয় নিয়ে কাজ করছে গোলাপগঞ্জ প্রেসক্লাব। গোলাপগঞ্জের সার্বিক উন্নয়নে প্রেসক্লাবের ভূমিকায় অগ্রপথিকৃৎ তিনি। ১৯৯২ খ্রিস্টাব্দে তাঁরই সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় মাসিক পত্রিকায় ‘জনতার মিছিল’। আনোয়ার শাহজাহান ১৯৯৫ খ্রিস্টাব্দে চলে যান যুক্তরাজ্যে। লন্ডন থেকে প্রকাশিত পাক্ষিক প্রবাস পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক (১৯৯৫-১৯৯৭) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দে লন্ডন থেকে তাঁরই সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় মাসিক লন্ডন বিচিত্রা (১৯৯৬-১৯৯৮), অনলাইন বাংলা পত্রিকা বাংলালিংক ডটকম (২০০২-২০০৯)। ২০০৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে তিনি আমাদের প্রতিদিন-এর সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও ২০১৪ খ্রিস্টাব্দে ত্রৈমাসিক আমাদের গোলাপগঞ্জ পত্রিকা প্রকাশ করেন। আনোয়ার শাহজাহান গোলাপগঞ্জ প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের সদস্য এবং ইউকে বাংলা অনলাইন প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা আহবায়ক। তিনি যুক্তরাজ্যস্থ গোলাপগঞ্জ হ্যালপিং হ্যান্ডস-এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, সহ-সভাপতি ও উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া তিনি গোলাপগঞ্জ উপজেলা সোশ্যাল ট্রাস্টের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এ পর্যন্ত তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা আটটি। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থগুলো: ক’জন কৃতিসন্তান (প্রকাশকাল ১৯৯৪), বিলেতের দিনগুলি ও অন্যান্য প্রসঙ্গ (১৯৯৫), আলোচ্য গ্রন্থ ‘গোলাপগঞ্জের ইতিহাস ও ঐতিহ্য’ (১৯৯৬ ও ২০১৫), ‘স্বাধীনতাযুদ্ধে খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা (প্রথম খন্ড ২০১৬)’, স্বাধীনতাযুদ্ধে খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা (দ্বিতীয়খন্ড ২০১৭)’ সিলেটের খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা (২০১৮), ‘সিলেটে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত স্থান ও সৌধ’ (২০১৮), এবং `Galantry award recipient freedom fighters of Sylhet’ (২০২১) বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তাঁর প্রকাশিত সবগুলো গ্রন্থ বিপুল পাঠকপ্রিয়তা অর্জন করে।
আনোয়ার শাহজাহান বিভিন্ন সময়ে তাঁর সম্পাদনায় অনেক সাময়িকী এবং সাহিত্য-পত্রিকা প্রকাশিত হয়। যা থেকে তাঁর সাহিত্যের প্রতি অনুরাগ এবং ভালোবাসা প্রকাশ পায়। ১৯৯৩ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত ‘মধ্যাহ্নের কোলাহল’ নামক কাব্যগ্রন্থ তার সম্পাদনা জীবনের মাইলফলক ছিল। সিলেটের তৎকালীন নবীন-প্রবীণ আটান্ন জন কবির কবিতা নিয়ে কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত হয়। এর মাধ্যমে কবি হিসেবেও পরিপূর্ণভাবে আত্মপ্রকাশ করেন আনোয়ার শাহজাহান। কাব্যগ্রন্থটির মাধ্যমে কবি-সাহিত্যিকদের সাথে তার গভীর সম্পর্ক সৃষ্টি হয়।
লেখালেখির স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি জাতীয় লেখক পরিষদ, ঢাকা থেকে ‘লেখক সম্মাননা পদক’-এ ভূষিত হন। একজন সমাজসেবক হিসেবে আনোয়ার শাহজাহানের রয়েছে অসামান্য খ্যাতি ও গ্রহণযোগ্যতা। নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী তিনি সমাজের কল্যাণে কাজ করেন। সমাজকল্যাণমূলক কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি বিভিন্ন অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন।
আনোয়ার শাহজাহান একজন সমাজতাত্ত্বিক ও সমাজশিল্পী। তাঁর অকান্ত পরিশ্রমলব্দ গবেষণাগ্রন্থ ‘গোলাপগঞ্জের ইতিহাস ও ঐতিহ্য’ কে পাঠ করতে গিয়ে একটা পর্যবেক্ষণী শক্তি উদ্ভব হয়েছে। আমি লেখক গবেষক আনোয়ার শাহজাহানের লেখার মধ্যে নতুন একটা চোখ, একটা ভিন্ন মাত্রা, বাস্তবভিত্তিক সমাজ দর্শনের চিত্র খুঁজে পেয়েছি। একটি সাদা কাপড়ে বিদ্যমান বড় দাগগুলো মানুষ সহজে ধরতে পারলেও সমাজদেহের অস্পষ্ট কিংবা খুঁত দেখতে পায় না। অনেকাংশে পাশ কাটিয়ে যায়। কিন্তু আনোয়ার শাহজাহান পাশ কাটাবার নীতি অবলম্বন করেন নি। ‘গোলাপগঞ্জের ইতিহাস ও ঐতিহ্য’ গ্রন্থে গভীর পর্যালোচনায় এটাই মনে হয়েছে। ইতিহাস ও ঐতিহ্যের বলয়ে সমাজদেহের চিত্র অঙ্কন করা এটাও লেখকের অনন্য গুণ। এজন্যই আনোয়ার শাহজাহান একজন সার্থক সমাজতাত্ত্বিক ও শিল্পী।
বহুগুণে গুণান্বিত আনোয়ার শাহজাহান তাঁর কর্মগুণে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করেছেন অনেক শিক্ষা ও সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠান। তার মধ্যে গোলাপগঞ্জ উপজেলা প্রেসকাব ভবন, আনোয়ার শাহজাহান প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং প্রবাসে আমাদের প্রতিদিন অনলাইন পত্রিকা ও জালালাবাদ টেলিভিশন উল্লেখযোগ্য। তাঁর চিন্তা-চেতনা, দৃষ্টিভঙ্গি, স্বকীয়তা দেশ নির্মাণে ভূমিকা রাখছে। তাঁর চিন্তার প্রখরতা প্রতিটি পদক্ষেপ এনে দিয়েছে অনন্যতা। সাহিত্য, সাংবাদিকতা, ব্যবসা সকল ক্ষেত্রে তার ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। লেখক হিসেবে সংবেদনশীলতা, গবেষক হিসেবে অনুসন্ধানী, শেকড়ের প্রতি আগ্রহী, সাংবাদিকতায় নিষ্ঠা তাঁর সাফল্যময় অগ্রযাত্রায় সহযোগিতা করেছে। তাঁর কর্মধারার বিস্তৃতি ও প্রসারতা একজন কীর্তিমান ব্যক্তিত্বের স্বাক্ষর। আমি নিষ্ঠাবান সাংবাদিক, লেখক ও গবেষক আনোয়ার শাহজাহানের সার্বিক জীবনের সর্বাঙ্গীণ সাফল্য কামনা করি।
।।
মঙ্গলবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১।
লেখকঃ এডভোকেট শেখ আখতার উল ইসলাম একজন লেখক, আইনবিদ, রাজনীতিবিদ। ষাটের দশকের তুখোড় ছাত্রনেতা হিসেবেও বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক আখতার উল ইসলাম একজন লেখক হিসেবেও পরিচিত। এ পর্যন্ত তাঁর ৪টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।
সিলেটের গোলাপগঞ্জ থানার ভাদেশ্বর ইউনিয়নের শেখপাড়া গ্রামে ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দের শেখ আখতার উল ইসলাম জন্মগ্রহণ করেন।