লন্ডনের যাত্রীদের লাগেজ সিলেটে যাবে না
প্রকাশিত হয়েছে : ৭:১৮:৫৬,অপরাহ্ন ২৬ জুলাই ২০২০ | সংবাদটি ১৫৩৭ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন রিপোর্টঃ
বাংলাদেশ বিমানে লন্ডন ফেরত যাত্রীদের যাদের চূড়ান্ত গন্তব্য সিলেট, তাদেরও ঢাকা থেকেই লাগেজ সংগ্রহ করতে হচ্ছে। ঢাকায় ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হওয়ার পর তাদের ডমেস্টিক ফ্লাইটে সিলেটে পাঠানো হচ্ছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের এমন সিদ্ধান্তে বিড়ম্বনায় পড়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বৃটিশ নাগরিকরা। তাদের লাগেজ টেনে ডমেস্টিক টার্মিনালে যেতে হচ্ছে যা করোনার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। যদিও করোনা নিয়ন্ত্রণের জন্যই উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশনায় বিমান এমন নির্দেশনা জারি করেছে বলে জানিয়েছেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের উপ-মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) তাহেরা খন্দকার। তার দাবি কিছু ইস্যু থাকে, বিশেষ করে করোনা পজেটিভ বা উপসর্গ রয়েছে এমন যাত্রীদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন বা আইসোলেশনে পাঠাতে হয়। এটা নিশ্চিত করতেই উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্তে লন্ডন ফেরতদের সিলেট না পাঠিয়ে ঢাকায় ইমিগ্রেশন হচ্ছে। সঙ্গত কারণেই তাদের লাগেজও সিলেটে যাচ্ছে না, বরং ঢাকা থেকেই কালেক্ট করতে হচ্ছে।
একইভাবে চট্টগ্রামেও মধ্যপ্রাচ্য থেকে পরিচালিত বাংলাদেশ বিমানের কোনো ফ্লাইট যাচ্ছে না। চট্টগ্রামগামী যাত্রীদেরও ঢাকায় ইমিগ্রেশন করতে হচ্ছে, লাগেজ নিয়েই তাদের ডমেস্টিক ফ্লাইট ধরতে হচ্ছে। ওই কর্মকর্তা বলেন, এটা বিমানের সিদ্ধান্ত নয়, বরং বিমান উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করছে মাত্র। এদিকে ঢাকায় ইমিগ্রেশন এবং ঢাকা থেকেই লাগেজ সংগ্রহের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া হয়েছে লন্ডনে। হাইকমিশনের দ্বারস্থ হয়েছে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূতরা। তারা এ সিদ্ধান্তের পরিবর্তন চেয়েছেন। দাবি জানিয়েছেন প্রয়োজনে সিলেটে আইসোলেশন সেন্টার করার, তবুও তাদের ইমিগ্রেশন যেন সিলেটে হয় এবং লাগেজ যেন সিলেটই যায়। করোনা ঠেকাতে ঢাকার নেয়া বিভিন্ন সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বৃটিশ নাগরিকদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বাংলাদেশ হাইকমিশনের তরফে জানানো হয় তারা এ বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন। দায়িত্বশীল প্রতিনিধিরা বলছেন, সরকারি সিদ্ধান্তের বিষয়ে তারা জানার চেষ্টা করছেন। একই সঙ্গে কমিউনিটিকেও বিষয় অনুধাবনের অনুরোধ করা হচ্ছে। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, করোনা বিষয়ক সরকারি বেশ কিছু সিদ্ধান্তে লন্ডনস্থ বাংলাদেশ কমিউনিটির প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে তারা অবহিত। যতটা সম্ভব তা শিথিল করার চিন্তায় এবং বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বৃটিশদের কষ্ট লাঘবে পুরো বিষয়টি পর্যালোচনার মধ্যে রয়েছে।
ইমিগ্রেশন ঢাকায় হলেও লাগেজ সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনের চেষ্টায় রয়েছে ঢাকা। এদিকে সরকারি ওই সিদ্ধান্তে নেট দুনিয়ায় অনেকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন। বৃটিশ-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল হেলাল খান গতকাল ফেসবুক পোস্টে লিখেন- ‘গতকাল বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্স (সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ) একটি নোটিশ দিয়ে আমাদের জানিয়েছে যে, এখন থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্সে যারা লন্ডন থেকে সিলেট যাবেন তারা ঢাকায় ইমিগ্রেশন করে সেখানেই তাদের ব্যাগেজ ক্লেইম করতে হবে এবং ঢাকা থেকে আবার নতুন করে বোর্ডিং পাস নিয়ে সিলেটে যাবেন! কেউ কি ভাবতে পারেন কতটুকু জুলুম-নিপীড়নমূলক মানসিকতা থেকে বিমানের ঐ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীরা এ কাজটি করছেন? নিঃসন্দেহে এটি একটি চরম সিলেট বিদ্বেষী আচরণ! একজন ব্যবসায়ী হিসেবে নয়, সমাজের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি- আমাদের পূর্ব পুরুষদের রক্ত ঘামে গড়া দেশের মানুষের সঙ্গে এই অমানবিকতার শেষ হোক! আসুন এ অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই একসঙ্গে।