শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন, টানা ৩৯ বছরের সফলতা
প্রকাশিত হয়েছে : ৬:০৭:৫৫,অপরাহ্ন ১৭ মে ২০২০ | সংবাদটি ৮৯৩ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: বঙ্গবন্ধুর কন্যা ও আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালের ১৭ মে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন। ১৯৭৫ সালে ইতিহাসে সবচেয়ে কলঙ্কজনক ঘটনার পর দীর্ঘ নির্বাসন শেষে এই দিনে দেশে ফেরেন তিনি।
এরপর টানা ৩৯ বছর (১৯৮১-২০২০) সফলতার সঙ্গে নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন এ দেশের স্বাধীনতার নেতৃত্ব দেয়া প্রাচীনতম রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের। সেই সঙ্গে তার যোগ্য নেতৃত্বে চার বার রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছে দলটি। ফলে আজ অনন্য উচ্চতার শিখরে আওয়ামী লীগ।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। বিদেশে থাকায় বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা প্রাণে বেঁচে যান।
পরবর্তী সময়ে ১৯৮১ সালের ১৪-১৬ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশনে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। তখন শেখ হাসিনার দেশে ফেরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে সে সময়কার সরকার। এ পরিস্থিতির মধ্যে ১৯৮১ সালের ১৭ মে শেখ হাসিনা দেশে প্রত্যাবর্তন করেন। ওই দিন বিকেল সাড়ে ৪টায় ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের বোয়িং বিমানে তিনি ভারতের রাজধানী দিল্লি থেকে কলকাতা হয়ে বাংলাদেশে এসে পৌঁছান।
প্রত্যাবর্তনের দিন শেখ হাসিনাকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানাতে উপস্থিত হয় লাখ লাখ মানুষ। তাদের হৃদয় ছোঁয়া ভালোবাসায় সিক্ত হন শেখ হাসিনা।
সেদিন তিনি জনতার উদ্দেশ্যে বলেন, সব হারিয়ে আমি আপনাদের মাঝে এসেছি। আমি আওয়ামী লীগের নেত্রী হওয়ার জন্য আসিনি। আপনাদের বোন হিসেবে, মেয়ে হিসেবে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে আমি আপনাদের পাশে থাকতে চাই।
শেখ হাসিনা দেশে ফিরে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন শুরু করেন। দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম এবং নানামুখী ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আওয়ামী লীগকে আজকের এই শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে এসেছেন তিনি। এরই ধারাবাহিকতায় ৯০ এর গণআন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারের পতন হয়, বিজয় হয় গণতন্ত্রের। ১৯৯৬ সালের ১২ জুন সাধারণ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে জয়লাভ করে এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন করে।
বহুবার শেখ হাসিনার প্রাণনাশের চেষ্টা করা হয়। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তাকে হত্যা করতে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। সেই হামলায় তিনি প্রাণে বেঁচে গেলেও আওয়ামী লীগের ২৩ জন নেতাকর্মীকে প্রাণ দিতে হয়েছে।
দেশে ফেরার পর থেকে সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা টানা ৩৯ বছর সফলতার সঙ্গে নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন এ দেশের স্বাধীনতার নেতৃত্বদানকারী প্রাচীনতম রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের। সেই সঙ্গে তার যোগ্য নেতৃত্বে চারবার আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছে।
এই দীর্ঘ সময় দলের প্রধানের দায়িত্বে থেকে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে তাকে কঠিন পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। কারাবরণ, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মৃত্যুর মুখোমুখি হয়ে অনেক বাধা পেরিয়ে তিনি আওয়ামী লীগকে আজকের অবস্থানে দাঁড় করিয়েছেন। বাংলাদেশের সুনাম অর্জন করেছেন বিশ্বের বুকে।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর সাধারণ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জোট সরকার টানা তিনবার ক্ষমতায় এসে ইতিহাস সৃষ্টি করে এবং সাফল্যের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকার দেশ পরিচালনা করছে। নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি, বলিষ্ঠ নেতৃত্ব এবং জনকল্যাণমুখী কার্যক্রমে দেশ আজ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে।
এ দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম অব্যাহত রাখার পাশাপাশি দল ও সরকারের নেতৃত্বে থেকে বাংলাদেশের জন্য বড় বড় অর্জনও বয়ে এনেছেন তিনি। আজকের ডিজিটাল বাংলাদেশ তার নেতৃত্বেই এগিয়ে যাচ্ছে। মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে তার গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচি জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হচ্ছে। শুধু বাংলাদেশই নয়, বৈশ্বিক নানা সংকট নিয়ে কথা বলা এবং মতামত দেয়ার মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক পরিসরেও শেখ হাসিনার ভূমিকা প্রশংসিত হয়েছে।
এদিকে সারাবিশ্ব এখন করোনাভাইরাসের কবলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ইউরোপ, আমেরিকার দেশগুলো এই সংকট মোকাবিলা করতে হিমশিম খাচ্ছে। এই সংকটময় পরিস্থিতিতেও শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অন্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থা অনেক ভালো।