১৪ দিন শেষ হলেও কোয়ারেইনটাইনেই থাকবেন খালেদা জিয়া!
প্রকাশিত হয়েছে : ১:০৪:০৫,অপরাহ্ন ০৯ এপ্রিল ২০২০ | সংবাদটি ৪১৬ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নির্ধারিত ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইন বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) শেষ হচ্ছে। তা শেষ হলেও করোনার বর্তমান বিপর্যস্ত পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত তিনি হোম কোয়ারেইনটাইনেই থাকবেন।
বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মোবাইল ফোনে গণমাধ্যমকে এমন তথ্যই জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাসের সংক্রামণে এখন সারা বিশ্বের যে অবস্থা এবং পুরো দেশ লকডাউনের মতো হয়ে গেছে- এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তো শতভাগ তাকে (খালেদা জিয়া) কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। সেখানে উনি সেইফ আছেন।’
এখন উনি (খালেদা জিয়া) সম্পূর্ণ হোম কোয়ারেন্টাইন পরিবেশেই থাকবেন জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা আশা করি, এর মধ্যে (কোয়ারেন্টাইন অবস্থায়) উনি ভালো থাকবেন। যখন এ (করোনাভাইরাস সংক্রমণ) পরিস্থিতির সমস্যাটা কমবে তথনই পরবর্তি অবস্থার কথা আমরা চিন্তা করবো।’
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘ম্যাডাম যথেষ্ট অসুস্থ। এখনো ইনফ্যাক্ট ইম্প্রুভমেন্ট উনার অসুখের খুব বেশি হয় নাই। একটা মূল বিষয় ছিল যে, তাকে চিকিসার জন্য দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়া- আমাদের দাবিটা ছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে তারা বলেছেন যে, দেশের বাইরে যাওয়া যাবে না।’
‘দেশের ভেতরে চিকিৎসা সেবার যে অবস্থাটা তাতে করে তো সব ডাক্তারাও সার্ভিস দিতে পারছেন না’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যতটুকু পারছে তার যে ব্যক্তিগত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা রয়েছেন তারা তাকে দেখেছেন, দেখছেন এবং একটা চিকিৎসা দিয়েছেন। আমরা আশা করি যে, এর মধ্যে উনি ভালো থাকবেন।’
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক টিমের সদস্য বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘ম্যাডামের চিকিৎসার সব কিছু লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান তত্ত্বাবধায়ন করছেন।’
তিনি বলেন, ‘আজকে উনার ১৪দিনের কোয়ারেন্টাইন শেষ হচ্ছে। এখন সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পরিবারের সদস্যরা তার সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করতে পারবেন।’
শর্তসাপেক্ষ খালেদা জিয়া ২৫ মার্চ মুক্তি পান। মুক্তির আগ পর্যন্ত তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। হাসপাতালের থেকে মুক্তি পেয়ে অসুস্থ খালেদা জিয়া গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’য় আসেন। ‘ফিরোজা’র দোতলায় খালেদা জিয়া কোয়ারেন্টাইনে আছেন। সঙ্গে নার্সসহ কয়েকজন রয়েছে। এ ১৪দিন কেউ নিচে নামেননি বলে জানান তার ব্যক্তিগত এক চিকিৎসক।
৭৫ বছর বয়সী খালেদা জিয়া রিউমাটয়েড আর্থারাইটিস, ডায়াবেটিস, চোখ ও দাঁতের নানা রোগে ভুগছেন।
অধ্যাপক জাহিদ বলেন, ‘দীর্ঘ দুই বছরের বেশি সময়ে ধরে নির্জন কারাবাস এবং পর্যাপ্ত চিকিৎসা না হওয়া কারণে ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা খুব খারাপ পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে। হাত-পায়ে আর্থারাইটিজের প্রচণ্ড ব্যাথার কারণে উনি ভীষন কষ্ট পাচ্ছেন। এ ব্যাথা উপশমের ফিজিওথার্যাপি দেওয়া হচ্ছে।’
খালেদা জিয়া ডায়েবেটিক এখনো যথাযর্থ নিয়ন্ত্রণে আসেনি জানিয়ে তিনি বলেন, উনাকে সম্পূর্ণ সুস্থ করে তুলতে দীর্ঘ এবং উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন হবে।
‘ফিরোজা’য় গেটে পাহারারত নিরাপত্তা কর্মীরা জানান, ম্যাডামের বাসায় প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত করা হয়েছে। শুধু চিকিৎসকের টিমের সদস্যরা ও কয়েকজন নিকটতাত্মীয় স্বজন আসছেন।