খোকা চির নিদ্রায়, ‘স্বাধীন করেও দেশে আসতে পারেননি বাবা’
প্রকাশিত হয়েছে : ১:১৯:৪৮,অপরাহ্ন ০৭ নভেম্বর ২০১৯ | সংবাদটি ৫৮৮ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: অবিভক্ত ঢাকার সর্বশেষ মেয়র ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকার সর্বশেষ জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) বাদ আসর পুরান ঢাকার ধূপখোলা এলাকায় সাদেক হোসেন খোকা মাঠে তার সর্বশেষ পঞ্চম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
পুরান ঢাকায় তার নামাজে জানাজায়ও সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে। এ সময় স্থানীয় পুরান ঢাকাবাসী তাদের এ নেতাকে শেষ শ্রদ্ধা জানান। এখান থেকে সাদেক হোসেন খোকার লাশ নেওয়া হয় পুরান ঢাকার জুরাইন কবরস্থানে। সেখানেই এই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে দাফন করা হয়।
এর আগে লাশ নিয়ে যাওয়া হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সেখানে বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকাকে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন- গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি মুক্তিযোদ্ধা জাফরুল্লাহ চৌধুরী, জেএসডি সভাপতি আসম আবদুর রব, মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, জাসদের নাজমুল হক প্রধান, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ, গণফোরাম নেতা আবু সাঈদ, বীর প্রতীক হাবিবুল আলম, শিল্পী ফকির আলমগীর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাদা দল, ভাসানী অনুসারী পরিষদ, গণতান্ত্রিক বাম জোট, স্বাধীনতা ফোরাম, মুক্তিযোদ্ধা দলের উলফাক ও সাদেক খান, জাতীয় হিন্দু মহাজোট, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি অনিক রায় ও মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম দল।
এরপর লাশ নিয়ে যাওয়া হয় বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। সেখানে বাদ জোহর তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। দুপুর ৩টায় ৪র্থ জানাজা অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ভবনে। পরে বাদ আসর গোপীবাগ নিজ বাসা হয়ে ধূপখোলা মাঠে পঞ্চম এবং সর্বশেষ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সাদেক হোসেন খোকার মরদেহে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জানানোর সময় আবেগঘন বক্তৃতা তাঁর বড় ছেলে প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন জনতার উদ্দেশ্যে বলেন, আমার বাবা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়েও দেশের মাটিতে মরতে পারেননি। জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করে স্বাধীন করা দেশে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করতে পারেননি তিনি। নিজে জীবন বাজি রেখে দেশ স্বাধীন করেছেন, কিন্তু স্বাধীন করেও প্রতিহিংসার কারণে আমার বাবা দেশে আসতে পারেননি। তাকে আসতে দেয়া হয়নি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা এখনই দূর করা প্রয়োজন। আমাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করা প্রয়োজন। বেগম খালেদা জিয়া যে প্রতিহিংসার কারণে কারাগারে রয়েছেন তা সমাধান করার জন্যও প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন তিনি।
বাবার স্মৃতি রোমন্থন করে ইশরাক বলেন, প্রায় সময়ই আব্বু বলতেন- ‘যেই বাংলাদেশ নিজ হাতে স্বাধীন করেছি, সেই দেশে আমাকে কি বাক্সবন্দি হয়ে ফিরতে হবে…।’ শেষ পর্যন্ত বাবার কথাই সত্যি হলো। তাকে দেশে আনা হলো, তবে সুস্থ অবস্থায় নয়, একেবারে কফিনে মুড়িয়ে বাক্সবন্দি করে। এ কথা বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন খোকার ছেলে ইশরাক।