ভ্রাম্যমাণ আদালত কেন, নিম্ন আদালতেও শিশুদের বিচার বেআইনি!
প্রকাশিত হয়েছে : ১০:৫৩:২৬,অপরাহ্ন ২৫ জুন ২০২০ | সংবাদটি ৫৬২ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: ভ্রাম্যমাণ আদালতে শিশুদের সাজা দেয়া অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে পূর্নাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। রায়ে ১২১ শিশুকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের দেয়া সাজাও বাতিল করা হয়েছে।
রায় প্রদানকারী বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের স্বাক্ষরের পর সুপ্রিমকোর্টের ওয়েবসাইটেও ২৯ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশ করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) এ মামলায় অন্যতম আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম এ তথ্য জানান।
রায়ে বলা হয়েছে, শিশুর বিরুদ্ধে যেকোনো অভিযোগের বিচার শুধু শিশু আদালতেই হতে হবে। ভ্রাম্যমাণ আদালত দূরের কথা, নিম্ন আদালতের কোনো বিচারক শিশুদের বিচার করলেও তা হবে বেআইনি। কোনো অপরাধে প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশু একত্রে জড়িত থাকলেও শিশুর বিচার শুধু শিশু আদালতই করবে। অন্য কোনো আদালত দন্ড দিলে তা অবৈধ হবে। শিশুদের মোবাইল কোর্ট কোনো দন্ড দিতে পারবে না। কারণ মোবাইল কোর্ট কোনো শিশুকে দন্ড দিলে তা সংবিধানের ৩০ ও ৩৫ অনুচ্ছেদে মৌলিক ও মানবাধিকার লঙ্ঘিত হবে। ১২১ শিশুকে দন্ডদানের ক্ষেত্রেও মৌলিক ও মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে। গত ১১ মার্চ এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে হাইকোর্ট রায় দেন।
আদালত রায়ে বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে একইসময়ে ওই ১২১ শিশুকে যে প্রক্রিয়ায় সাজা দেয়া হয়েছে তা মানবাধিকারের লঙ্ঘন ও অমানবিক। একইসঙ্গে এই ধরনের সাজাপ্রদান আমাদের বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে বহির্বিশ্বে দেশের সুনামকে ক্ষুন্ন করেছে। তাই এখনই তা বন্ধ করতে হবে।
গত বছরের ৩১ অক্টোবর ভ্রাম্যমাণ আদালতের দেয়া দন্ডে যশোর ও টঙ্গীর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে অন্তরীণ ১২১ শিশুকে মুক্তির নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে শিশুদের দেয়া দন্ড ও আটকাদেশ কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। আদালতের আদেশে পরে এসব শিশুদের মুক্তি দেয়া হয়।
‘আইনে মানা, তবু ১২১ শিশুর দন্ড’ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন ছাপা হয়। প্রতিবেদনটি নজরে নিয়ে আদালত শিশুদের মুক্তির নির্দেশ ও রুল জারি করেন। প্রতিবেদনটি আদালতের নজরে এনে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম ও এডভোকেট ইশরাত হাসান।