‘সাংবাদিকের কাজই খবরের পেছনে ছোটা, তাতে দোষ দেখছিনা’
প্রকাশিত হয়েছে : ১০:১৬:৫৪,অপরাহ্ন ০৪ মার্চ ২০২০ | সংবাদটি ৪৩০ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যাকাণ্ডের তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়ার আগেই গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ায় প্রশ্ন তুলেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেন, ‘সাংবাদিকদের কাজই হলো খবরের পেছনে ছোটা। তারা খবর সংগ্রহ করতে ছুটবেই। সাংবাদিকদের কোনও দোষ দেখছিনা।’
বুধবার (৪ মার্চ) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব কথা বলেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সাগর-রুনি হত্যা মামলার অগ্রগতি প্রতিবেদন হাইকোর্টের উপস্থাপনের পর বেঞ্চের সিনিয়র বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম বলেন, ‘এ রিপোর্ট মিডিয়ায় কীভাবে গেলো? মনে হয় অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় বা তদন্ত সংস্থার কাছ থেকে গেছে। কোর্টে উপস্থাপনের আগেই এভাবে মিডিয়ায় রিপোর্ট প্রকাশ পেলে জনমনে এক ধরনের পারসেপশন তৈরি হয়।’
এ পর্যায়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার বলেন, ‘আমি সাংবাদিক ছিলাম, আমি কাউকে কোনো রিপোর্ট দেইনি। যে কারণে সাংবাদিক বন্ধুরা আমাকে দেখতে পারেন না।’ তিনি আরও বলেন, ‘এভাবে রিপোর্ট প্রকাশ আদালত অবমননার শামিল।’
বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম বলেন, ‘সাংবাদিকরা রিপোর্ট পেলেই ছাপাবেন, এটাই স্বাভাবিক। যদি সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনের সঙ্গে তদন্ত প্রতিবেদনের মিল না থাকে, তখন তাদের দোষারোপ বা ধরার সুযোগ থাকে।’ তিনি আরও বলেন, ‘রিপোর্ট যে আদালতে দাখিলের আগেই সাংবাদিকদের হাতে গেছে, তার দায় তো কাউকে না কাউকে স্বীকার করতেই হবে।’
প্রসঙ্গত, গত সোমবার (২ মার্চ) সাগর-রুনি হত্যা মামলায় র্যাবের সর্বশেষ অগ্রগতি প্রতিবেদন আদালতে দাখিলের আগেই বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে সাংবাদিক দম্পতি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারোয়ার এবং এটিএন বাংলার সিনিয়র প্রতিবেদক রুনি নিজ ভাড়া বাসায় নির্মমভাবে খুন হন। পরদিন ভোরে তাদের ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়।
ওই ঘটনার পর রুনির ভাই নওশের আলম রোমান শেরেবাংলা নগর থানায় হত্যা মামলা করেন। প্রথমে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন ওই থানার এক উপ-পরিদর্শক (এসআই)। এর ৪ দিন পর মামলাটির তদন্তভার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়।
কিন্তু দীর্ঘ দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে তদন্ত করেও রহস্য উদঘাটন করে পারেনি ডিবি। পরবর্তী সময়ে হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল হত্যা মামলাটির তদন্তভার র্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয়। র্যাব দীর্ঘ তদন্তের পর গত ২ মার্চ অ্যাটর্নি জেনালের অফিসে অগ্রগতি প্রতিবেদন জমা দেয়।