ওড়না না পরা ও কোরআন না জানায় দুই ছাত্রীকে র্যাগিং!
প্রকাশিত হয়েছে : ১২:৩৩:৪৭,অপরাহ্ন ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | সংবাদটি ৫১৯ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: শরীরে ওড়না না থাকায় ও পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত না জানায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই ছাত্রী দু’দফা র্যাগিংয়ের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র ছাত্রীরা তাদের ওড়না মানসিক নির্যাতন করেন। ওই দুই ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলেও জানা গেছে।
বুধ ও বৃহস্পতিবার (৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তার মালিকানাধীন ছাত্রী মেসে দুই দফায় তাদের র্যাগ করা হয়।
ভুক্তভোগী দুই ছাত্রী জানান, সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) তাদের নবীন বরণ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের চেকপোস্ট সংলগ্ন এক ছাত্রী মেসে তাদের ডেকে নিয়ে যান সিনিয়ররা। সেখানে বুধবার র্যাগিংয়ের শিকার হন তারা। তাদের একজন সেদিনই অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার রাতে অপর এক ছাত্রীকে আবার ডেকে পাঠান সিনিয়র ছাত্রীরা। সেখানে দ্বিতীয় দফায় তার সঙ্গে ওড়না না থাকায় ও সুরা বলতে না পারায় মানসিক নিপীড়ন করা হয়। এরপর ওই ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনি কক্ষে ফিরে যাওয়ার সময় সিঁড়ি থেকে পড়ে যান। তাকে বৃহস্পতিবার রাতে প্রথমে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। পরবর্তীতে বমি করলে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
মেয়ের ওপর নিপীড়নের খবর পেয়ে তার মা ক্যাম্পাসে আসেন। এসময় তিনি বলেন, ‘আমার মেয়কে অমানবিকভাবে র্যাগ দেয়া হয়েছে। তাকে পোশাক পরা, সুরা বলা এসব বিষয়ে র্যাগ দেওয়া হয়েছে। আমার মেয়ে কী পোশাক পরবে সেটা আমি ঠিক করব। ওরা কে এসব নিয়ে কথা বলার’।
এদিকে, ঘটনা শুনে অসুস্থ দুই ছাত্রীকে দেখতে হাসপাতালে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা ড. শেখ সুজন আলী, সহকারী প্রক্টর ও নাট্যকলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আল-জাবির, অগ্নিবীণা হলের হাউস টিউটর মাসুদুল মান্নান ও নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষক মুশফিকুর রহমান হীরক।
নাট্যকলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আল-জাবির বলেন, আমি আমার শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা না দিতে পারলে আমার দায়িত্বে থাকার কী দরকার। শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে এটি স্পষ্ট যে তার ওপর মানসিক চাপ প্রয়োগ করা হয়েছে এবং এতে সে ভীত হয়ে পড়েছে। পরবর্তীতে সে সিঁড়ি থেকে পড়ে আহত হয়েছে। এই শিক্ষার্থী একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, এই মানসিক নির্যাতন যারা করেছে তার বিচার না করতে পারলে আমি আমার সহকারী প্রক্টর পদ থেকে পদত্যাগ করব।’
উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, এর সঙ্গে যারা যুক্ত থাকুক, তাদের কোনো ছাড় দেয়া হবে না। ইতোমধ্যে চার সদস্যের একটি অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি গঠন করে দিয়েছি। খুব দ্রুতই জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমাদের এই ক্যাম্পাসে র্যাগিংয়ের নামে কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চলবে না।