ঢাবি ছাত্রীর ধর্ষকের হাত থেকে রক্ষা পায়নি প্রতিবন্ধী-ভিক্ষুক নারীও!
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:১৫:১৮,অপরাহ্ন ০৮ জানুয়ারি ২০২০ | সংবাদটি ৬৩০ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার মজনু (৩০) একজন ‘সিরিয়াল র্যাপিস্ট’ (তালিকাভুক্ত ধর্ষক) বলে দাবি করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ান (র্যাব)। সে একই স্থানে এর আগেও একাধিকবার এরকম নগন্য কাজ করেছে। প্রতিবন্ধী ও ভিক্ষুক নারীদেরও এখানে ধরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেছে।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার প্রধান লে. কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম বলেন, ‘মজনুকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে। এর আগেও বিভিন্ন সময় সে প্রতিবন্ধী ও ভিক্ষুক নারীদের ওপরও এমন যৌন নির্যাতন চালিয়েছে। সে একজন সিরিয়াল র্যাপিস্ট।’
বুধবার (৮ জানুয়ারী) দুপুরে কারওয়ানবাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। তিনি জানান, আজ ভোর সাড়ে চারটার দিকে ঢাকার শেওড়া (জোয়ার সাহার) রেলক্রসিং এলাকা থেকে মজনুকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে গত রবিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কুর্মিটোলা এলাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী ধর্ষণের স্বীকার হয়। এ ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্ষকের বিচার দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। আন্দোলনের জোয়ার পৌঁছে যায় সাধারণ মানুষের মধ্যেও। দেশজুড়ে আলোড়ন তোলে ওই ঘটনা। ওই ঘটনায় ধর্ষণের শিকার মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে ক্যান্টনমেন্ট থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতানামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। ঘটনার চারদিনের মাথায় মজনুকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
র্যাবের মুখপাত্র জানান, মজনু আগে থেকেই কুর্মিটোলা হাসপাতাল থেকে শেওড়ার দিকে যাওয়ার রাস্তায় ওৎপেতে ছিল। তখন ওই শিক্ষার্থীর ব্যাগটি দেখে তার পিছু নেয়। এবং এক পর্যায়ে তাকে ঝাপটে ধরে নির্জনস্থানে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। ধর্ষণ শেষে সব ছিনিয়ে নিয়ে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল মজনু। ওই জায়গায় সে এর আগেও বিভিন্ন প্রতিবন্ধী নারী, ভিক্ষুক নারীকে ধরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে।
ওই ঘটনায় করা মামলার এজাহার গতকাল ঢাকার আদালতের কাছে উপস্থাপন করা হয়। পরে আগামী ২৮ জানুয়ারির মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, রাজধানীর শেওড়া এলাকায় বান্ধবীর বাসায় যাওয়ার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে করে গত রবিবার বিকাল ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে রওনা দেন ওই শিক্ষার্থী। রাত সাতটার দিকে বাসটি কুর্মিটোলায় থামে।
বাস থেকে নেমে ওই শিক্ষার্থী ফুটপাত দিয়ে শেওড়ার দিকে হাঁটা শুরু করেন। গলফ ক্লাব মাঠসংলগ্ন স্থানে গেলে পেছন থেকে অজ্ঞাতনামা আসামি তার গলা চেপে ধরেন। এতে ওই ছাত্রী অচেতন হয়ে পড়েন। এরপর তাকে ধর্ষণ করা হয়। পাশাপাশি মারধরও করা হয় তাকে।
পরে সিআইডির ক্রাইম সিন বিভাগ ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছু আলামত সংগ্রহ করেছে। ওই ছাত্রীর চিকিৎসায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মেডিকেল বোর্ড গঠন করে। স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ।