ঢাবি শিক্ষার্থীকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ, প্রতিবাদে উত্তাল
প্রকাশিত হয়েছে : ৭:৪০:৪৬,অপরাহ্ন ০৬ জানুয়ারি ২০২০ | সংবাদটি ৬৩৬ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক ছাত্রীকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা।
ধর্ষণের ওই ঘটনা জানাজানির পর থেকেই ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন বিভিন্ন সংগঠন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা, যা এখনো চলছে। এসব কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। অন্যথায় কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
রবিবার (৫ জানুয়ারী) সন্ধ্যায় ঢাবির ক্ষণিকা বাসে উঠেছিলেন ঢাবির ওই শিক্ষার্থী। সন্ধ্যা সাতটার দিকে কুর্মিটোলায় বাস থেকে নামার পর অজ্ঞাত ব্যক্তিরা মুখ চেপে তাকে পার্শ্ববর্তী একটি স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে অজ্ঞান করে ধর্ষণ ও শারীরিক নির্যাতন করা হয় ওই শিক্ষার্থীকে। রাত ১০টার দিকে জ্ঞান ফিরলে তিনি নিজেকে নির্জন স্থানে আবিষ্কার করেন। পরে সেখান থেকে উদ্ধার করে রাত ১২টার দিকে ঢামেক হাসপাতালের ওয়ান স্টপ সেন্টারে ভর্তি করান তার সহপাঠীরা।
ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর থেকে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন ঢাবি শিক্ষার্থীরা। রাতেই ঘটনার প্রতিবাদে ঢাবিতে মিছিল করেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। এছাড়া রাজপথে নেমে আসে ছাত্রলীগও।
রাত তিনটার দিকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে কয়েকশ নেতাকর্মী মিছিলে অংশ নেন। মিছিলটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের গেট থেকে শুরু হয়ে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এসে শেষ হয়।
ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে রাতে ঢাবিতে মিছিল করেন সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতাকর্মীরাও।
রাত সাড়ে তিনটার দিকে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতাকর্মীরা একটি মিছিল বের করেন। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গা প্রদক্ষিণ করে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে গিয়ে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। এতে অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক আখতার হোসেন, পরিষদের নেতা মুহাম্মদ রাশেদ খান, সোহরাব হোসেন প্রমুখ।
রাত সাড়ে তিনটার দিকে রাজু ভাস্কর্যে অনশনে বসেন সিফাতুল ইসলাম নামে এক শিক্ষার্থী। তিনি দর্শন বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র।
সিফাতুল ইসলাম বলেন, ‘এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনা প্রতিনিয়তই ঘটছে। এমন ঘটনা রোধ করতে সামাজিক আন্দোলন দরকার। এজন্য আমার এই অনশনে বসা।’
ধর্ষণের প্রতিবাদে সোমবার সকালে রাজু ভাস্কর্যের সামনে মানববন্ধন করেন বেশ কিছু শিক্ষার্থী। মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শেখ কান্তা রেজা নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা জানতে চাই পরের নম্বরটা কার। আমরা অনেক লাইনে দাঁড়িয়েছি, অনেক অনশন এবং বিচার চেয়েছি, তাতে কি ফল হয়েছে।’
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ‘চিৎকার কানে পৌঁছাবে কবে’, কোথায় গেলে আমরা নিরাপদ, ‘জন্মই আমাদের আজন্ম পাপ’ লেখা সম্বলিত বিভিন্ন ফেস্টুন প্রদর্শন করেন।
ধর্ষণের প্রতিবাদে সকাল ১১টার দিকে রাজু ভাস্কর্যের সামনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মানববন্ধনে অংশ নেন। তারা ধর্ষণের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
এছাড়া কুর্মিটোলায় ঢাবি ছাত্রীকে ধর্ষণের সঙ্গে জড়িতদের বিচার চেয়ে দুপুরে ঢাবির অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে বিক্ষোভ করছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলও। তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।