ভারত-বাংলাদেশ ঐতিহাসিক বন্ধুত্বে ফাটলের আশঙ্কা!
প্রকাশিত হয়েছে : ৮:৫২:২৬,অপরাহ্ন ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯ | সংবাদটি ১১৩৭ বার পঠিত
সুব্রত আচার্য: প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশই ভারতের একমাত্র পরীক্ষিত বন্ধু বলে মনে করা হয়। তবে ক্যাব-এনআরসি ইস্যুতে সেই ঐতিহাসিক বন্ধুত্বে কিছুটা হলেও ফাটল ধরার আশঙ্কা কলকাতার বুদ্ধিজীবী এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের।
১৯৭১ সালে ইন্দিরা-মুজিব চুক্তির মাধ্যমে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান থেকে যাওয়া উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দিয়েছিল ভারত। মুক্তিযুদ্ধের সময় এক কোটি বাংলাদেশি শরণার্থীকে আশ্রয় এবং সেনা সহায়তাও দেয় দেশটি। গঙ্গা চুক্তি, স্থল-রেল-বিমান পথে যোগাযোগ, বাণিজ্য বাড়ানোসহ প্রতিবেশী দুই দেশ বন্ধুত্বের প্রমাণ দিয়েছে বারবার।
এবার সেই ঐতিহাসিক মিত্রতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের অনুপ্রবেশ ইস্যুকে বার বার সামনে আনা এবং বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ তুলে সংসদে বক্তব্য দেওয়া দু’দেশের বন্ধুত্বে ফাটল ধরাতে পারে বলে আশঙ্কা বিশ্লেষকদের।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব অর্কপ্রভ সরকার বলেন, নেপাল অনেকটাই চীনের দিকে ঝুঁকে রয়েছে। শ্রীলঙ্কায় রাজাপাকসে ভাইয়েরা ক্ষমতায় আসায় এবং তাদের অতীত বলে তারা অনেকটাই চীনঘনিষ্ট। শেখ হাসিনা সরকার সত্যিকারেই ভারতবন্ধু বলেই জলসীমান্ত এবং স্থলসীমান্ত নিয়ে যে বিবাদগুলো ছিলো তার নিষ্পত্তি হয়েছে। এমনকি ছিটমহল বিনিময় পর্যন্ত হয়ে গেছে। হঠাৎ করে তাদের বিদেশমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর স্থগিত করার একটা রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক তাৎপর্য অবশ্যই আছে।
বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের তীব্র সমালোচনা করলেন কলকাতার শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ইমানুল হক।
ভাষা ও চেতনা সমিতির সম্পাদক ইমানুল হক বলেন, বাংলাদেশকে বাদ দিয়ে ভারত চলতে পারবে? সার্বভৌম একটা দেশের নাম করে অন্য দেশের সংসদে বসে এভাবে বলা যায়? তাদের বিদেশমন্ত্রী যেভাবে সফর বাতিল করেছেন তাতে আমি মনে করি তিনি বাংলাদেশের জনগণের যথাযথ সম্মান রক্ষা করেছেন।
তবে এখনই হতাশ হতে রাজি নন অনেকে। তাদের মতে, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক মজবুত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। অচিরেই চলমান সংকট কেটে যাবে বলেও আশা তাদের।
কলকাতার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক গবেষক অধ্যাপক চারুচন্দ্র কলেজের অধ্যাপক বিমল শঙ্কর চন্দ বলেন, এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক একটা খুব শক্তিশালী জায়গায় এই মুহূর্তে রয়েছে। এনআরসি ইস্যুতে সেটা একেবারে নষ্ট হয়ে যাবে, আমি সেটা মনে করছি না।
আসাম, ত্রিপুরা, মেঘালয়ের অস্থিরতা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গজুড়েও চড়ছে উত্তেজনার পারদ। এর মধ্যে বাংলাদেশেও ভারতবিরোধিতা শুরু হলে বিজেপি সরকারকে মাশুল দিতে হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। (সময়)