দাবি না মানায় অধ্যক্ষকে পুকুরে ফেলে দিলো ছাত্রলীগ!
প্রকাশিত হয়েছে : ৩:০৮:৫৬,অপরাহ্ন ০২ নভেম্বর ২০১৯ | সংবাদটি ৫৯৬ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: ফরম ফিলাপের সুযোগ না দেওয়ায় রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদকে পুকুরে ফেলে দিয়েছে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
শনিবার (২ নভেম্বর) দুপুরে পলিটেকনিক ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে। সাঁতরে কিনারে এলে আশপাশের কয়েকজন অধ্যক্ষকে পুকুর থেকে উদ্ধার করে।
অধ্যক্ষ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শনিবার সকাল ১১টার দিকে রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং কম্পিউটার বিভাগের শেষ পর্বের ছাত্র কামাল হোসেন সৌরভের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের কয়েকজন অধ্যক্ষের সঙ্গে তার কার্যালয়ে দেখা করে। এ সময় তারা দুজন শিক্ষার্থী যারা নিয়মিত ক্লাস করেনি এবং মধ্য পর্ব পরীক্ষায় অংশ নেয়নি, তাদের ফাইনাল পরীক্ষার ফরম পূরণের সুযোগ দেওয়ার দাবি জানায়।
অধ্যক্ষ তাদের কথা শুনে বলেন, কারিগরি শিক্ষায় ৭৫ ভাগ ক্লাস না করলে এবং মধ্য পর্ব পরীক্ষায় অংশ না নিলে ফাইনাল পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ নেই। অধ্যক্ষ তাদের কথায় রাজি না হয়ে বিষয়টি নিয়ে তাদের বিভাগীয় প্রধানদের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। অধ্যক্ষের কথা শুনে তারা কার্যালয় থেকে বের হয়ে ক্যাম্পাসের দলীয় টেন্টে গিয়ে জড়ো হয়।
দুপুর দেড়টার দিকে অধ্যক্ষ জোহরের নামাজ শেষে মসজিদ থেকে বের হয়ে নিজ কার্যালয়ে ফিরছিলেন। এ সময় কামাল হোসেন সৌরভের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী অধ্যক্ষকে রাস্তা থেকে তুলে পাশের পুকুরে ফেলে দেয়। অধ্যক্ষ সাঁতার কেটে কিনারে এলে আশপাশের কয়েকজন তাকে উদ্ধার করে।
এ ঘটনার পর থেকে ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কামাল হোসেন সৌরভ কম্পিউটার বিভাগের শেষ পর্বের ছাত্র এবং পলিটেকনিক শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি মেহেদী হাসান রিগেনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত। এর আগে দুটি পরীক্ষায় রেফার্ড পেয়েছে সে।
অধ্যক্ষ প্রকৌশলী ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, কিছু ছাত্র নিয়মিত ক্লাস করে না এবং মধ্য পর্ব পরীক্ষায়ও অংশ নেয় না। অথচ তাদের অভিভাবকরা জানে তাদের সন্তানরা নিয়মিত ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। আমার সাথে দেখা করতে আসা ছাত্রদের আমি বলেছিলাম, যাদের ক্লাস এবং মধ্য পর্ব পরীক্ষা নিয়ে সমস্যা আছে, তারা তাদের অভিভাবকদের নিয়ে এলে তাদের ফরম ফিলাপের সুযোগ দেওয়া হবে। কিন্তু তারা আমার কথায় গুরুত্ব না দিয়ে আমাকে মেরে ফেলার জন্যই পুকুরে ফেলে দিয়েছিল।
‘পুকুরে বাঁশ পোতা ছিল। আমি ধারালো সেই বাঁশে পড়ে গেলে কিংবা সাঁতার না জানলে আজ হয়তো মরেই যেতাম।’
চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. গোলাম মোস্তফা জানান, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। এ ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।