ক্যাসিনো সম্রাটকে নিয়ে লুকোচুরির অবসান!
প্রকাশিত হয়েছে : ৬:০৮:৪৮,অপরাহ্ন ০৬ অক্টোবর ২০১৯ | সংবাদটি ৫৬৯ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: ক্যাসিনো সম্রাটকে নিয়ে লুকোচুরি কম হয়নি। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের পর থেকেই তার অবস্থান ও গ্রেপ্তার নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়। তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন বলে গুঞ্জন শোনা গেলেও সরকার বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে এ নিয়ে কিছু বলা হয়নি। আবার তিনি বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন বলেও খবর আসে গণমাধ্যমে।
তবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন সম্রাট দ্রুতই গ্রেপ্তার হবেন-এমন কথা সরকারের ঊর্ধ্বতনেরা বলে আসছিলেন।
অবশেষে শনিবার (৫ অক্টোবর) গভীর রাতে কুমিল্লায় চৌদ্দগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ‘ক্যাসিনো সম্রাট’ হিসেবে আলোচিত যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী ওরফে সম্রাটকে।
চৌদ্দগ্রামের আলকরা ইউনিয়নের কুঞ্জুশ্রীপুর গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে সম্রাট ও তার সহযোগী আরমানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের মুখপাত্র সারওয়ার-বিন-কাশেম বিষয়টি নিশ্চিত করলেও সম্রাটকে গ্রেপ্তারের বিস্তারিত তথ্য দেননি। সংবাদ সম্মেলন করে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানাবে পুলিশের এই এলিট ফোর্সটি।
তবে চৌদ্দগ্রামের যে গ্রামটি থেকে সম্রাটকে গ্রেপ্তার করা হয় সেখানকার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, কুঞ্জুশ্রীপুর গ্রামের এক আত্মীয়ের বাসায় আত্মগোপনে ছিলেন সম্রাট। গভীর রাতে বাড়িটি ঘিরে রাখে র্যাব। পরে ভোরের দিকে সম্রাটকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।
আলকরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গণমাধ্যমকে বলেছেন, ঘটনার সময় তিনি এলাকায় ছিলেন না। তবে স্থানীয়রা তাকে ফোন করে ঘটনা সম্পর্কে বলেছেন।
সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যেতে সম্রাট ওই আত্মীয়ের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
যুবলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষোভ প্রকাশের চার দিনের মাথায় ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে রাজধানীতে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু করে র্যাব। সেদিন ঢাকার মতিঝিলের ক্লাবপাড়ায় র্যাবের অভিযানে অবৈধ ক্যাসিনো চলার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর থেকে আলোচনায় ছিল যুবলীগ নেতা সম্রাটের নাম।
সেদিন যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূইয়া গ্রেপ্তার হওয়ার পর সদলবলে কাকরাইলে সংগঠনের কার্যালয়ে অবস্থান নিয়ে রাতভর সেখানে ছিলেন সম্রাট।
র্যাবের অভিযানের সময় মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া চক্রের ভেতরে সম্রাটের বিশাল ছবি দেখা যায়। ওই ক্লাবের ক্যাসিনো তিনিই চালাতেন এবং মতিঝিল ক্লাবপাড়ায় অন্য ক্যাসিনোগুলো থেকেও প্রতিদিন নির্দিষ্ট হারে চাঁদা তার কাছে যেত বলে গণমাধ্যমে খবর আসে।
এরপর চলমান অভিযানের মধ্যে সম্রাটকে গ্রেপ্তার নিয়ে এক ধরনের ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়। তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন না বিদেশে চলে গেছেন এ নিয়ে সরকারের বিভিন্ন দায়িত্বশীলদের বিভিন্ন সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়।
সম্প্রতি সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সম্রাটের গ্রেপ্তার নিয়ে বলেন, ‘আমি তো বলেছি ধৈর্য ধরুন, অপেক্ষা করুন; দেখতে পাবেন। এছাড়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালও বলেছিলেন, ‘অপেক্ষা করুন, যা ঘটবে দেখবেন। আপনারা অনেক কিছু বলছেন, আমরা যেটি বলছি ‘সম্রাট’ হোক আর যেই হোক, অপরাধ করলে তাকে আমরা আইনের আওতায় আনব। এমন গুঞ্জনের মধ্যেই আজ সম্রাটকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।