গঙ্গায় প্রতিমা বিসর্জন দিলে জরিমানা ৫০ হাজার!
প্রকাশিত হয়েছে : ১:৪৯:৫১,অপরাহ্ন ০৫ অক্টোবর ২০১৯ | সংবাদটি ৯১০ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: গঙ্গা নদীতে প্রতিমা বিসর্জনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। এক আদেশে বলা হয়, পরিবেশ সুরক্ষিত রাখতে দশেরা, দীপাবলি, ছট ও সরস্বতী পূজায় এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এক প্রতিবেদনে জানায়, ইতোমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গসহ ১১টি রাজ্যকে এ সংক্রান্ত চিঠি নির্দেশনা পাঠিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, গঙ্গা বা তার কোনও উপনদীতে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া যাবে না। এ নির্দেশ অমান্য করা হলে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা শুরু হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের এমন সিদ্ধান্তে রীতিমতো চিন্তায় পড়েছেন দুর্গাপূজার উদ্যোক্তারা। যদিও সরকারের নির্দেশনায় দুর্গাপূজার উল্লেখ নেই কিন্তু ‘দশেরার’ কথা উল্লেখ থাকায় পূজা আয়োজকদের মধ্যে সংশয় দেখা দিয়েছে।
কেন্দ্রের এ সংক্রান্ত ১৫ দফা নির্দেশনা পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরাখ-, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়ঝ-, দিল্লি, হিমাচল প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগড়, হরিয়ানা, রাজস্থানে পাঠানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গঙ্গায় প্রতিমা বিসর্জন ঠেকাতে যাতে এই নির্দেশনা কঠোরভাবে পালন করা হয়, সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে। এ ব্যাপারে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, সে ব্যাপারে উৎসব শেষে ৭ দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট রাজ্যকে।
চলতি বছরের শুরুতে গঙ্গার পানি ও সেখানকার জীববৈচিত্র্য সম্পর্কে জুলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার কর্মকর্তা কৈলাস চন্দ্র জানিয়েছিলেন, দূষিত পানির পাশাপাশি গঙ্গা দূষণের অন্যতম কারণ প্লাস্টিক। বিশেষত মাইক্রো প্লাস্টিক। এটি মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণীর জন্য সংকট তৈরি করছে। দূষণের কারণে গঙ্গার জীববৈচিত্র্যে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। বহু গাঙ্গেয় জীব, বিশেষত ডলফিন, শুশুক, কচ্ছপ, বিভিন্ন মাছের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে।
কলকাতার বাড়ির পুজো বা উত্তর কলকাতার বিভিন্ন পুজো কমিটিগুলি এখনও গঙ্গাতেই প্রতিমা বিসর্জনের পক্ষপাতী। এর পিছনে বহু বছর ধরে চলে আসা কিছু নিয়ম বা মানুষের বিশ্বাস জড়িত। রাজবাড়ি বা বনেদী বাড়ির সাবেকী প্রতিমাগুলি গঙ্গা ছাড়া অন্য কোথাও বিসর্জন হবে, সেটা কিছুতেই মেনে নিতে এখন অনেকেই রাজী হন না।
পরিবেশবিদ সুভাষ দত্তের মতে,‘‘প্রতিমার রং-এ সীসা ছাড়াও আরও অনেক রাসায়নিক পদার্থ থাকে। এছাড়া প্রতিমার সঙ্গে যে অঙ্গসজ্জা থাকে সেগুলিকে আগে খুলে রাখতে হয়। অতীতে দেখা যেত কাঠামোগুলি দু’তিন মাস ধরে গঙ্গার পাড়ে পড়ে থাকতে দেখা যেত। ২০০০ সাল থেকে দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে এই নিয়ে লড়াই চালাচ্ছি আমরা। বর্তমানে তাই পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি যে হয়েছে। রাতারাতি হয়তো সবকিছু পরিবর্তিত হবে না। গ্রিন ট্রাইব্যুনালের নির্দেশকা অনুযায়ী অনেক কিছুই করতে বাধ্য হয়েছে কলকাতার পৌরসভা। কিন্তু প্রতিমা পানিতে ফেললে রং পানির সঙ্গে মিশবেই। তাই গঙ্গায় পানি বিসর্জন না হওয়াই ভালো।’’