সিলেটে চাঁদাবাজদের যন্ত্রণায় অতিষ্ট এক যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী!
প্রকাশিত হয়েছে : ১:৪৩:১৫,অপরাহ্ন ০৫ অক্টোবর ২০১৯ | সংবাদটি ৭৫৫ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: সিলেটে বাড়ি করে সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের যন্ত্রণায় অতিষ্ট এক যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী। এ চক্রের কবল থেকে নিজেকে রক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেটের পুলিশ কমিশনারসহ উর্ধ্বতন প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সাহায্য চেয়েছেন তিনি।
শনিবার (৫ অক্টোবর) সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মো. সুলেমান সাহায্য প্রার্থনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে সুলেমান বলেন, আমি একজন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এডভোকেট। বর্তমানে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের গোটাটিকর এলাকায় বাড়ি নির্মাণ করে স্থায়ীভাবে বসবাস করছি। ১৫ বছর আগে আমি ৫ তলা ভবন নির্মাণ যখন শুরু করি তখন ঐ এলাকার মৃত আব্দুর রাজ্জাকের পুত্র এনামুল হক এনাম ও আব্দুস শহীদের ছেলে মাহছুমুল হক রুহেল আমার কাছে চাঁদা দাবি করে। স্থানীয় কমিশনারসহ এলাকার সচেতন মহলকে জানালে তাদের সেই অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়। আমি প্রবাসে থাকায় ওই বাসায় আমার শশুড় থাকেন এবং অনেক সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিও ভাড়া হিসাবে থাকেন। এনাম ও রুহেল আমার শশুড়কে হয়রানী করতে থাকে। সম্প্রতি আমি দেশে এসে বাসায় উঠলে তারা আবারও ষড়যন্ত্রে মেতে উঠে। আমার শশুড় ১০ হাজার টাকা ভাড়া সাব্যস্তে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট থানার দেওর গ্রামের আলী মিয়া মোল্লার ছেলে জাবেদ আহমদকে বাসা ভাড়া দেন। তিনি অগ্রিম বাসাভাড়া দিতে এলে আমি তার ভোটার আইডি কার্ড দিতে বলি। তিনি পরে দিবেন বললে আমি জানিয়ে দেই আইডি কার্ড ছাড়া ভাড়া দেবনা। আমি তাকে এক সপ্তাহের মধ্যে বাসাটি ছেড়ে দিতে বলি। সে অনুযায়ী জাবেদ তার মালপত্র নিয়ে চলে যান।
সুলেমান আরও বলেন, গত ১৪ সেপ্টেম্বর এনাম ও রুহেল ফয়জুল হক নামক একজনকে নিয়ে বাসায় এসে জানান যে, ভাড়াটিয়া জাবেদ নাকি তার ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এসময় তাদের কাছে আরও ৮/১০ জন লোক ছিল। তারা নিজেদের সাংবাদিক মানবাধিকার কর্মী ইত্যাদি হিসেবে পরিচয় দিয়ে আমাদের হেনস্থা করার চেষ্টা করে। পুলিশে খবর দিলে সেদিন তারা এসে তাদের তাড়িয়ে দেয়।
এরপর থেকে এনাম, রুহেল ও তাদের সহযোগিরা বারবার যোগাযোগ করে তাদের ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দিতে বলে। নইলে তারা ফয়জুল হককে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে মামলা করানোর হুমকি দেয় এবং আমি জানতে পারি যে বালাগঞ্জের চাঁদপুর গ্রামের বাসিন্দা ফয়জুল হক (৩৫) নামক এক ব্যক্তি থানায় মামলাদায়ের করেছেন। তার অভিযোগ আমার বাসায় তাকে নেশাদ্রব্য খাইয়ে শহীদুল, জুবায়ের ও মাসুম নামক তিন ব্যক্তি তার কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে। ঐ মামলায় রহস্যজনক কারণে আমাকে ও আমার শশুড়কে যথাক্রমে ৪, ৫ নম্বর ও সমাজসেবক সিরাজুল ইসলাম কুনু মিয়াকে ৬ নম্বর আসামী করা হয়। আমরা ১৭ সেপ্টেম্বর আদালতে হাজির হয়ে জামিন পাই।
কোন প্রমাণ নেই, স্বাক্ষি নেই, এমন একটি সাজানো মামলা অতিদ্রুত রেকর্ড করেন মোগলাবাজার থানা কর্তৃপক্ষ। এ ব্যাপারে ৩০ সেপ্টেম্বর আমি এসএমপি কমিশনারের প্রবাসী কল্যাণ সেলে অভিযোগ দাখিল করেছি।
এছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, প্রতারক চক্রের মূলহোতা এনামুল হক এনাম কখনো নিজেকে সাংবাদিক, কখনো পুলিশের সোর্স আবার কখনোবা মানবাধিকার কর্মী পরিচয় দিয়ে গোটা এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। তার সহযোগি রুহেল একজন জালিয়াত ও চাঁদাবাজ। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। দেশে বিনিয়োগ করে এখানেই স্থায়ীভাবে বসবাসের আশায় এসে আমি আজ পদে পদে এই চক্রের দ্বারা হয়রানির স্বীকার হচ্ছি। এদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কঠোর ভূমিকা না রাখলে আমাকে আবারও প্রবাসে চলে যেতে হবে। তাছাড়া মোগলাবাজার থানার ইনচার্জের ভূমিকাও রহস্যজনক। তাই সুষ্ঠ তদন্তের ব্যাপারে আমি সন্দিহান। এ অবস্থায় মামলাটি পিবিআই, সিআইডি বা কোন গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে তদন্ত করা জরুরী। এ ব্যাপারে কমিশনারের কাছে আমরা জোরালো দাবি জানিয়েছি।
এছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে জালিয়াত এনামুল ও রুহেলের নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা করতে সংশ্লিদের কাছে জোর দাবি জানান মো. সুলেমান।