যেসব অঞ্চলে ২২ দিন ‘ইলিশ’ ধরা বন্ধ!
প্রকাশিত হয়েছে : ১:৩৭:৩৫,অপরাহ্ন ০৫ অক্টোবর ২০১৯ | সংবাদটি ১৪৬১ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ইলিশের প্রজনন নির্বিঘ্ন করতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ৯ অক্টোবর থেকে তিন সপ্তাহ ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। ইলিশ মাছ জাতীয় সম্পদ এই সম্পদ সংরক্ষণে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক তথ্য বিবরণীতে এ তথ্য জানানো হয়।
তথ্য বিবরণীতে বলা হয়, ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম ৯ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ২২ দিন প্রজনন ক্ষেত্রের ৭ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকায় সব ধরনের মাছ আহরণ,পরিবহন, মজুত, বাজারজাতকরণ এবং ক্রয়-বিক্রয় সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। এ আদেশ অমান্য করলে কমপক্ষে এক বছর থেকে সর্বোচ্চ দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড বা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ড পেতে হবে।
এতে আরো হয়, ইলিশের প্রজনন ক্ষেত্র গুলোর মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলার শাহের খালী থেকে হাইতকান্দি পয়েন্ট, ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার উত্তর তজুমদ্দিন থেকে পশ্চিম সৈয়দপুর আওলিয়া পয়েন্ট; পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার লতা চাপালি পয়েন্ট এবং কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপজেলার উত্তর কুতুবদিয়া থেকে গন্ডামারা পয়েন্ট। সরকারি নির্দেশ অনুসারে ইলিশের নিরাপদ প্রজননের জন্য চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বরিশাল, ভোলা,পটুয়াখালী,বরগুনা, পিরোজপুর,ঝালকাঠি, বাগেরহাট, শরীয়তপুর, ঢাকা, মাদারীপুর, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, জামালপুর, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মুন্সিগঞ্জ, খুলনা, সাতক্ষীরা, কুষ্টিয়া, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, নাটোর, পাবনা, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও গোপালগঞ্জ জেলার সব নদ-নদীতে এ সময় সব ধরনের মাছ ধরা বন্ধ থাকবে।
এ ছাড়া, দেশের সুন্দরবনসহ সমুদ্র উপকূলীয় এলাকা এবং মোহনাগুলোতেও এই ২২দিন মাছ ধরা বন্ধ থাকবে। দেশের মাছঘাট, আড়ত, হাটবাজার, চেইনশপসহ সংশ্লিষ্ট এলাকায় ওই ২২দিন অভিযানও পরিচালিত হবে।
এদিকে, মা ইলিশ রক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পটুয়াখালীতে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় জানায়, প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশ সম্পদ সংরক্ষণ কার্যক্রম বাস্তবায়নে জেলা টাস্কফোর্স কমিটির সভায় এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা ও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
পটুয়াখালী জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে জেলা প্রশাসক মতিউল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে জেলা মৎস্যজীবী সমিতি, জেলা ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী সমিতির প্রতিনিধি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে ইলিশের প্রজনন নির্বিঘ্ন করতে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে জেলা ও উপজেলায় সচেতনতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, নদী, সাগরের মোহনায় ও হাটবাজারে মাইকিং, ব্যানার, পোস্টারিং, প্রচারপত্র বিতরণ,জেলেদের সঙ্গে মতবিনিময় ও উঠান বৈঠক।
মৌসুম শুরুর আগেই মৎস্যজীবীদের ট্রলার ও নৌযান নদী বা সাগর থেকে তীরবর্তী স্থানে নিরাপদ হেফাজতে রাখা, জাল ও মাছ ধরার সরঞ্জাম দূরবর্তী স্থানে সরিয়ে রাখা, নদী ও সাগরের মোহনায় ইলিশ বিচরণক্ষেত্রে পর্যায়ক্রমে দিনে ও রাতে ভ্রাম্যমাণ আদালত ও অভিযান পরিচালনা করা। ১৯৮৫ সালের মাছ রক্ষা ও সংরক্ষণ বিধি (প্রটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন ফিস রুলস,১৯৮৫) অনুযায়ী প্রতি বছর আশ্বিনী পূর্ণিমার সময় ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ থাকে। প্রটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন ফিস রুলস সংশোধন করে ইলিশ ধরা নিষিদ্ধের সময় ২০১৬ সালে বাড়িয়ে ২২ দিন করা হয়। এর আগে এ সময় ছিল ১৫ দিন। ২০১৫ সালের আগে ইলিশ ধরা নিষিদ্ধের সময় ছিল ১১ দিন।