আদালত দেবে জামিন, কথা বললে বিচার ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ হবে!
প্রকাশিত হয়েছে : ৩:৪৩:২৪,অপরাহ্ন ০২ অক্টোবর ২০১৯ | সংবাদটি ৬৮০ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: কারাবন্দি বিএনপির প্রধান খালেদা জিয়ার জামিন নিয়ে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুন অররশিদের অনুরোধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, জামিন দেয়া আদালতের বিষয়। আদালত জামিন না দিলে আমি কীভাবে করব? কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে তিনি জামিন পাবেন কিনা সেটা আদালতের বিষয়। সরকার আদালতকে কীভাবে বলবে যে জামিন দিয়ে দেবেন? এটা কি বলা উচিত? তাহলে তো বিচার ব্যবস্থার প্রতি সরকারের হস্তক্ষেপ হবে।
বুধবার (২ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দফতরে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে খালেদা জিয়ার জামিন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মনোভাবের কথা সাংবাদিকদের জানান সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
কাদের বলেন, ‘বিএনপির একজন এমপি (হারুন অর রশিদ) আমার সঙ্গে দেখা করে খালেদা জিয়ার জামিনের বিষয়ে কথা বলেছেন। তিনি তাদের দলের অভিপ্রায়ের কথা বলেছেন যে, খালেদা জিয়াকে জামিন দিলে তিনি (খালেদা জিয়া) বিদেশে চিকিৎসার জন্য যাবেন।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘উনি যদি জামিন পান এবং চিকিৎসকরা যদি মনে করেন তার বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা করা দরকার, সেটা তারা বলতে পারেন। সে ধরনের কোনো রিপোর্ট পেলে, চিকিৎসকদের পরামর্শ থাকলে জানাতে পারেন। আদালতে জামিন দেয়ার বিষয়ে সরকার বলতে পারে না। এটি আদালতের উপর ছেড়ে দিন।’
এছাড়া সরকার খালেদাকে বিদেশে যাওয়ার বিষয়ে কোনো সহযোগিতা করবে কিনা জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বেগম জিয়ার সঙ্গে আমাদের তো আমাদের কোনো শত্রুতা নেই, তিনি যদি জামিন পান, জামিন পেলে চিকিৎসকরা বিদেশ যাওয়ার ব্যাপারে রিপোর্ট দেন তখন দেখা যাবে।’
এদিকে, জামিনের বাইরে বিকল্প ব্যবস্থায় খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা- এমন প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, এমপি হারুন শুধু জামিনের কথা বলেছেন, নেত্রীকে জানাতে বলেছেন। তিনি তো আন্তরিকভাবেই বলেছেন, বেগম জিয়ারও হয়তো ইচ্ছা থাকতে পারে। বেগম জিয়ার সঙ্গে আলোচনা করেই আমার সঙ্গে আলোচনা করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছি, প্রধানমন্ত্রী আদালতের বিষয় বলেছেন। আদালতের জামিন বিষয়টা মূল। বলেছেন, আদালতে জামিন না হলে কীভাবে দেখব?’
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হারুনুর রশীদ নিজেও এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানান কাদের। এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তারা জামিন আবেদন করলে পক্ষ-বিপক্ষ আলোচনা হবে। সে অবস্থায় এলে জামিন তারা কেন চান, জামিন চাওয়ার মতো মামলায় সেই সুবিধা আছে কিনা, সেটি দেখতে হবে। এটা আদালতের বিষয়। যিনি বিচারপতির আসনে বসবেন, তিনি সিদ্ধান্ত দেবেন। সরকারের এখানে কিছু করার নেই। খালেদা জিয়ার সঙ্গে আমাদের কোনো শত্রুতা নেই।’
এ সময় তিনি আন্দোলন করে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘বিএনপি ভেতরে ভেতরে খালেদার মুক্তির জন্য সরকারের সহযোগিতা চাইছে। তবে বাইরে দলের নেতারা আন্দোলন করে তাকে মুক্ত করার কথা বলছেন। আমি মনে করি, তারা আন্দোলন করুক। তারা আন্দোলন করে বিস্ফোরণ সৃষ্টি করে যদি তাকে মুক্ত করতে পারে, করুক। আন্দোলনের কথা বলেও তাদের কোনো ছোট ঢেউও দেখলাম না। তারা এত বড় দল, আন্দোলন করে তারা সরকার হটাক। তা হলে তো খালেদা জিয়া মুক্ত হবেন, তাদের সরকারে আসার খায়েশ পূরণ হবে।’
এর আগে বুধবার সকালে সচিবালয়ে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে নিজ নির্বাচনী এলাকার উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ে কথা বলেন হারুন অর রশীদ। এ সময় তিনি খালেদা জিয়ার জামিনের বিষয়েও কথা বলেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আজ সন্ধ্যায় কথা বলবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।