ডিসি-ইউএনও’র উপর নজরদারী বাড়ছে!
প্রকাশিত হয়েছে : ৫:০০:৫৪,অপরাহ্ন ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | সংবাদটি ৪৪৫ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: জামালপুরের সাবেক জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীরের নারী সংক্রান্ত ঘটনা নিয়ে সারাদেশে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এরপরই নড়েচড়ে বসে সরকার। এরইমধ্যে নেয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ।
জানা গেছে, এ ঘটনার জেরে জেলা প্রশাসকসহ মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পদে দায়িত্ব পালন করতে হলে স্বামী, স্ত্রী এবং সন্তানসহ কর্মস্থলে বসবাস বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। মাঠ পর্যায়ের প্রশাসনকে আরো গতিশীল করতে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে বলে সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে।
জানা যায়, পরিবার নিয়ে কর্মস্থলে না থাকলে এখন জেলা প্রশাসকসহ মাঠ পর্যায়ের প্রশাসনের অন্য কর্মকর্তাদের পদে নিয়োগ পাওয়া যাবে না। মাঠের প্রশাসনের যে কোনো পদের দায়িত্ব পেতে হলে সেই কর্মকর্তাকে আগেই অঙ্গীকার করতে হবে যে- তিনি সেখানে পরিবারসহ বসবাস করবেন।
এ বিষয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, জেলা বা উপজেলায় কোনো কর্মকর্তা পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন থাকলে তার দায়িত্ব পালনে ঘাটতি দেখা দেয়। এ জন্য মাঠ পর্যায়ে কাজের গতি বাড়াতে সরকারের ভেতরে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী কয়েকমাস আগে এই নির্দেশ দিয়েছেন। তা এখন বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, যারা জেলা প্রশাসক হবেন, তাদের পরিবার নিয়ে কর্মস্থলে থাকতে হবে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট নির্দেশ আছে। শুধু জেলা প্রশাসক নয়, মাঠপর্যায়ের সব কর্মকর্তাদের জন্য এটা প্রযোজ্য।
এদিকে, সুযোগ থাকা সত্ত্বেও এখনো যেসব ডিসি বা জেলা প্রশাসক কর্মস্থলে পরিবার নিয়ে থাকছেন না, সেটি কোনোভাবে বরদাশত করা হবে না- মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে থেকে এমন কড়া বার্তা এরইমধ্যে মৌখিকভাবে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
তবে অনিবার্য কারণে কেউ পরিবার নিয়ে কর্মস্থলে থাকতে না পারলে সেক্ষেত্রে কর্মরত ডিসির স্ত্রী কিংবা স্বামী সরকারি চাকরিজীবী হলে কীভাবে তাদের এক জেলার মধ্যে পদায়ন করা যায় সে বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, ডিসিদের সার্বিক কার্যক্রম আরো নিবিড়ভাবে মনিটরিং করার উদ্যোগ নিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এ বিষয়ে গত ২ সেপ্টেম্বর পাঁচ সদস্যের একটি বিশেষ তদারকি কমিটি গঠন করা হয়। গত ৩ সেপ্টেম্বর দুপুরে এ কমিটি প্রথম বৈঠক করে।
এছাড়া, প্রত্যেক ডিসির সার্বিক কর্মকাণ্ড মনিটরিং করতে গঠিত কমিটির বাইরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যথাযথ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নিজস্বভাবে বিভিন্ন সোর্সের মাধ্যমে অলিখিত কাউন্টার ইন্টিলিজেন্স প্রতিবেদনও সংগ্রহ করবে।
জানা গেছে, ডিসিরা তাদের অফিসে অবস্থান করছেন কিনা সেটি প্রতিদিন মনিটরিং করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে ল্যান্ডফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হয়। ওই সময় ডিসি বিশেষ জরুরি কোনো কাজে অন্য কোথাও থাকলে সেটিও যাচাই করে দেখা হয়।
এদিকে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ আগস্ট মাসের পরিসংখ্যানের তথ্য অনুযায়ী, প্রশাসনের প্রয়োজনে নিয়মিত কারণ ছাড়াও শৃঙ্খলাজনিত ও বিভিন্ন কারণে মোট ৩১৬ জন কর্মকর্তা ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) রয়েছেন। এদের মধ্যে শৃঙ্খলাজনিত কারণ এবং অতিরিক্ত ছুটিসহ বিভিন্ন কারণে ৯২ জন কর্মকর্তাকে শাস্তি স্বরূপ ওএসডি করা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, কোনো ডিসির বিরুদ্ধে অনিয়ম পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। এক্ষেত্রে কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা পেলে ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) করা হবে। এরপর তদন্ত শেষে বিভাগীয় মামলাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।