প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যাবে, তাই শিকল দিয়ে বাঁধা!
প্রকাশিত হয়েছে : ৩:২২:০৭,অপরাহ্ন ০১ আগস্ট ২০১৯ | সংবাদটি ১২৭২ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার ভয়ে কিশোরি মেয়েকে গরুর শিকল দিয়ে বেধেঁ রেখেছেন তার নানি, খালা ও মামা। ওই কিশোরির নাম হাফসা আক্তারকে (১৭) তিনদিন ধরে শিকল দিয়ে বেঁধে অমানুষিক নির্যাতন করছিলো তারা।
বুধবার (৩১ জুলাই) বিকেলে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে পরিবারের লোকজন তার শিকল খুলে দেয়। নির্যাতিতা ওই কিশোরি বরগুনার বামনা উপজেলার ডৌয়াতলা ইউনিয়নের দক্ষিণ ভাইজোড়া গ্রামের আবুল হোসেনের মেয়ে।
নির্যাতনের শিকার কিশোরীর বলেন, স্থানীয় এক যুবকের সঙ্গে আমার প্রেমের সম্পর্ক হয়। পরিবারের লোকজন আমাদের সম্পর্ক মানছে না। গত রোববার ওই যুবকের সঙ্গে ঘর ছেড়ে পালানোর সিদ্ধান্ত নিই। পরে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান আমাদের বিয়ে পড়ানোর আশ্বাস দিলে পালানোর সিদ্ধান্ত বাতিল করি আমি। আমার মা-বাবা এলাকায় না থাকায় আমাকে দক্ষিণ ভাইজোড়া গ্রামের নানি হাসিনা বেগম ও খালা হনুফা বেগমের জিম্মায় দেন চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান। কিন্তু যাদের জিম্মায় আমাকে রাখা হয় তারা আমাকে বেঁধে রাখে।
গত রোববার (২৮ জুলাই) থেকে বুধবার (৩১ জুলাই) পর্যন্ত গরু বাঁধার শিকল দিয়ে বেঁধে রেখে আমাকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করে তারা। পরে স্থানীয় সাংবাদিকরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এলে আমার পায়ের শিকল খুলে দেয়া হয়।
নির্যাতিত কিশোরীর মা নুর জাহান বেগম বলেন, আমার মেয়ে এখনো অবুঝ। আমার মেয়ে যে ছেলেটিকে পছন্দ করেছে ওই ছেলেটি মাদক মামলার আসামি। আগে একটি বিয়ে করেছে ওই ছেলে। তাই ওই ছেলের সঙ্গে আমার মেয়েকে কিছুতেই বিয়ে দেব না। তাতে যদি মেয়েকে কেটে নদীতে ভাসিয়ে দিতে হয়, তাই দেব।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ডৌয়াতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান বলেন, মেয়েটি অপ্রাপ্তবয়স্ক। মাদক মামলার আসামির সঙ্গে ঘর ছেড়ে পালাতে চেয়েছিল মেয়েটি। তাকে উদ্ধার করে নানি ও খালার জিম্মায় দিয়েছি। পরে তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখে তারা। এমন কাজটি করা তাদের ঠিক হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বামনা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মাসুদ্দুজ্জামান বলেন, বিষয়টি এখন পর্যন্ত আমাকে কেউ জানায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেব।