স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবি করায় কথিত স্বামীর দেয়া আগুনে দগ্ধ তরুনীর মৃত্যু
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:৪০:২১,অপরাহ্ন ২২ এপ্রিল ২০১৯ | সংবাদটি ৩৬৮ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: লক্ষ্মীপুরে স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবি করায় কথিত স্বামীর লাগানো আগুনে দগ্ধ তরুনী শাহিনুর আক্তার মারা গেছে।
সোমবার দুপুরে চিকিৎসাধিন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে মারাযান।
লক্ষ্মীপুর কমলনগর উপজেলার আয়ুব নগর গ্রামে শাহিনুরের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয় কথিত স্বামী। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৪ জনকে আটক করা হয়েছে।
রবিবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে তাকে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার শরীরের ৪০ ভাগই পুড়ে যায় বলে জানান চিকিৎসক। মারা যাওয়ার আগে শাহীনুরের অভিযোগ ছিলো, স্ত্রীর স্বীকৃতি চাওয়ায় সালাহ উদ্দিন কয়েকজন সহযোগী নিয়ে তার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার আসম মাহাতাব উদ্দিন জানান, ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
নিহত তরুণী চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার সোনাগাজী গ্রামের জাফর আলমের মেয়ে।
অভিযুক্ত সালাহ উদ্দিন চর ফলকন গ্রামের মহর আলীর ছেলে। তার বাড়ি নদীতে ভেঙে যাওয়ায় আইয়ুবনগর এলাকায় ঘর জামাই থাকেন। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তিনি পেশায় রিকশা চালক।
উল্লেখ্য, দুই বছর আগে মোবাইল ফোনে সালাহউদ্দিনের সঙ্গে তার প্রেম হয় এবং এর কয়েকমাস পরে রাউজানে তাদের বিয়েও হয়।
বিয়ের পর থেকে তার স্বামী এক বছর শ্বশুরালয়ে আসা-যাওয়া করলেও স্ত্রীকে কখনোই নিজের বাড়ি নেওয়ার আগ্রহ দেখায়নি বলে মেয়েটির ভাষ্য।
তিনি বলেন, বিভিন্ন সময়ে তিনি শ্বশুরবাড়ি আসার তাগিদ দিলেও তাতে সাড়া দেননি স্বামী সালাহ্ উদ্দিন। এ অবস্থায় খোঁজখবর নিয়ে গত শুক্রবার রাতে তিনি একাই ছুটে আসেন স্বামীর বাড়ি।
তার ভাষ্য, সেখানে এসে দেখতে পান সলাহ্ উদ্দিন দুই সন্তানসহ অন্য স্ত্রী নিয়ে অনেক আগে থেকেই এখানে সংসার করছেন।
এখানে নিজেকে স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিলে সালাহ্ উদ্দিন তা অস্বীকার করেন। এরপর তিনি স্ত্রীর স্বীকৃতি আদায়ের আশায় গত দুদিন ধরে এলাকায় বিভিন্নজনের কাছে ধর্না দেন বলে জানান।
বিষয়টি তিনি স্থানীয় চরফলকন ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. হাফিজ উল্যা ও গ্রাম পুলিশ আবু তাহেরকে জানান। তারা বিষয়টি সুরাহা করে দিবে বলে দুদিন সময়ক্ষেপণ করেন বলে মেয়েটি অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, “এ অবস্থায় রোববার বিকালে ওই প্রতারক স্বামী তাদের বাড়ির পাশের একটি সয়াবিন ক্ষেতে আমাকে ডেকে নিয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়।”
ইউপি সদস্য হাফিজ উল্যা বলেন, স্ত্রীর স্বীকৃতি চাওয়া যুবতীর কাছে বিয়ের কাগজপত্র তলব করা হয়। এ সময় মেয়েটি তার সংগ্রহে কোনো কাগজপত্র নেই বলে জানান।
“ দুপুরে তাকে কাগজপত্র নিয়ে ফেরত আসার কথা বলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।”
তিনি বলেন, “ফিরিয়ে দেওয়ার কিছু সময় পরেই অগ্নিদগ্ধ হওয়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। সেখান থেকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় কমলনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে দেই।”
পরে লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার আ স ম মাহাতাব উদ্দিনের হেফাজতে ওই তরুণীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়।