কর্মহীন-দরিদ্র মানুষের ‘বিল’ মওকুফের দাবি ২০ দলীয় জোটের
প্রকাশিত হয়েছে : ৬:৩০:১১,অপরাহ্ন ০৬ জুলাই ২০২০ | সংবাদটি ৫০৭ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিস্তার প্রতিরোধে দীর্ঘ লকডাউনে কর্মহীন-দরিদ্র মানুষের জন্য বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানিসহ সকল বিল মওকুফের জোর দাবি জানিয়েছে ২০ দলীয় জোট। একই সাথে সারাদেশে অস্থায়ী হাসপাতাল স্থাপনেরও প্রস্তাব করেছেন তারা।
সোমবার (৬ জুলাই) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্তের কথা জানান জোটের সমন্বয়কারী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
তিনি বলেন, রবিবার ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন। বৈঠকে দেশের প্রত্যেকটি শ্রম ঘন এবং ঘন বসতিপূর্ণ অঞ্চলে কোভিড পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য অস্থায়ী হাসপাতাল স্থাপন এবং পরবর্তীতে সেগুলো সরকারি-বেসরকারি যৌথ মালিকানায় পরিচালনার জন্য ২০ দল প্রস্তাব করছে। সমাজের অর্থবান ব্যক্তিদের এ ব্যাপারে উদ্যোগী হওয়ার জন্য আমরা আহবান জানাচ্ছি।
২০ দল মনে করে এ ব্যাপারে সরকার আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহ ও বন্ধুপ্রতীম বিভিন্ন রাষ্ট্রের সহযোগিতা নিতে পারে।
থাইল্যান্ডের প্রয়াত রাজা, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মতো আমাদের দেশের মন্ত্রী-এমপি-জনপ্রতিনিধি-জননেতা-ঊর্ধ্বতন আমলারা সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিলে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি হতো বলে মনে করে ২০ দল। একই সঙ্গে কোভিড-১৯ সংক্রামণ পরীক্ষার ফি বাতিলের দাবিও জানিয়েছে ২০ দল।
২০ দলীয় জোটের সভায় সরকারি সেবা প্রতিষ্ঠান যথা বিদ্যুৎ-গ্যাস-পানির বিল পরিশোধে বিপন্ন জনগণকে বাধ্য করার সরকারি উদ্যোগের তীব্র নিন্দা জানিয়ে আগামী ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত বিল আদায় স্থগিত ঘোষণা এবং কর্মহীন-দরিদ্র মানুষের জন্য বিল মওকুফ করার জোর দাবি জানানো হয়।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ২০ দল বিদ্যমান পরিস্থিতিতে যথা সম্ভব ঘরে থাকা, জনসমাগম এড়িয়ে চলা এবং ই-কমার্সের সুযোগের পাশাপাশি আত্মীয়-বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম বহুল ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের কল চার্জের ওপর আরোপিত অতিরিক্ত কর প্রত্যাহারের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানায়।
সংসদে পাস হওয়া ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট প্রত্যাখান করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবি, দেশীয় প্রতিষ্ঠান সিপিডিসহ আন্তর্জাতিক কিংবা দেশীয় প্রতিষ্ঠানের কোনো মতামতকে গুরুত্ব না দিয়ে যে বাজেট প্রনয়ণ করা হলো তা গণমানুষের কোনো কল্যাণ করবেন না। ধনবান এবং ক্ষমতাসীনদের স্বার্থ রক্ষা করবে বলে ২০ দল এ বাজেট প্রত্যাখান করছে।
ঘূর্ণিঝড় আম্পানের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের পুনর্বাসনের সহায়তা করার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে ২০ দল। রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধের বিষয়ে ২০ দলের অবস্থান তুলে ধরে নজরুল ইসলাম খান বলেন, পাটকল বন্ধ করার ফলে পাট চাষিরা যে ক্ষতির সম্মুখীন হবেন সেই ক্ষতি পূরণে সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছে ২০ দল।
২০ দলীয় জোটের ভার্চুয়াল বৈঠকে ২২টি দলের মধ্যে ১৯টি দলের শীর্ষ নেতারা ছিলেন। এরা হলেন, বিএনপির নজরুল ইসলাম খান, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, জামায়াতে ইসলামীর মিয়া গোলাম পারোয়ার, খেলাফত মজলিশের আহমেদ আবদুল কাদের, ইসলামী ঐক্যের এম এ রকীব, জমিয়তে উলামা ইসলামীর আল্লামা নুর হোসেনেই কাশেমী, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, মুসলিম লীগের এএইচএম কামরুজ্জামান খান, ডেমেোক্রেটিক লীগের সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, পিপলস লীগের চেয়ারম্যান গরীব নেওয়াজ, ন্যাপ-ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির চেয়ারম্যান আবু তাহের, এনডিপির আবু মো. তাহের, জাগপার খোন্দকার লুদফুর রহমান, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, এলডিপির শাহাদাত হোসেন সেলিম ও বাংলাদেশ ন্যাপের শাওন সাদেকী।