ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফান’ মোকাবিলায় প্রস্তুত যুদ্ধজাহাজ!
প্রকাশিত হয়েছে : ৪:১৮:৩২,অপরাহ্ন ১৯ মে ২০২০ | সংবাদটি ৪৮৮ বার পঠিত
বরগুনা থেকে সংবাদদাতা:: ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফান’ মোকাবিলায় বরগুনায় সাধারণ মানুষকে নিরাপদে রাখতে ৬১০ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। একই সঙ্গে ঘূর্ণিঝড় পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী উদ্ধার তৎপরতাসহ ত্রাণ তৎপরতা পরিচালনার জন্য একটি যুদ্ধজাহাজ ও ল্যান্ডিং ক্রাফটের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এছাড়া আম্ফানের কবল থেকে প্রাণহানি ঠেকাতে বরগুনার নদী ও সমুদ্র তীরবর্তী বাসিন্দাদের সন্ধ্যার আগে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হবে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নেয়া সাধারণ মানুষের জন্য ইফতারসহ রাতের খাবার এবং সাহরির আয়োজন করবে জেলা প্রশাসন।
মঙ্গলবার (১৯ মে) দুপুরে বরগুনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্ফান মোকাবিলায় ইতোমধ্যে বরগুনার ছয় উপজেলায় ২৫ লাখ টাকা ও দুইশ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। জেলায় মোট ৬১০ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় তিন লাখ মানুষ আশ্রয় নিতে পারবেন। সেই সঙ্গে ২০ হাজার গবাদি পশু-পাখি আশ্রয় নিতে পারবে। এছাড়া আশ্রয়কেন্দ্রের আওতায় থাকবে বরগুনার সব ভবন। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে সামাজিক দূরত্ব মানতে বাধ্য করা হবে আশ্রিতদের।
ডিসি মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, জেলায় কৃষকের উৎপাদিত বোরো ধানের মধ্যে ৮০ ভাগ ধান ইতোমধ্যে ঘরে তোলা সম্ভব হয়েছ। শতভাগ তরমুজ, মুগডাল এরং সূর্যমুখী কৃষকরা ঘরে তুলতে সক্ষম হয়েছেন। আমাদের এখানে ভুট্টার ব্যাপক ফলন হয়েছে। কিন্তু পরিপক্ক না হওয়ায় মাত্র ৫০ ভাগ ভুট্টা আমরা ঘরে তুলতে পেরেছি। বাদামের বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু পরিপক্ক না হওয়ায় বাদাম ঘরে তোলা যায়নি।
বেড়িবাঁধের নাজুক অবস্থা নিয়ে ডিসি বলেন, বরগুনা জেলায় প্রায় ৮০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে ২০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ। ইতোমধ্যে আমরা ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ সংস্কারের জন্য চারটি টিম গঠন করেছি। এই টিমগুলো বেড়িবাঁধ মেরামত কাজে নিয়োজিত রয়েছে। সমুদ্রে অবস্থানরত সব মাছ ধরা ট্রলার ইতোমধ্যেই আমরা নিরাপদে নিতে সক্ষম হয়েছি। কিছু ট্রলার এখনও নিরাপদ আশ্রয়ে না গেলেও সেগুলো নিরাপদ স্থানের খুব কাছাকাছি থেকে নিরাপদে আছে।
সংবাদ সম্মেলনে বরগুনায় দায়িত্বপ্রাপ্ত নৌবাহিনীর কর্মকর্তা কমান্ডার ইমরান বলেন, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় আমরা বরগুনাবাসীর পাশে ছিলাম। ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের সময়ও আমরা বরগুনাবাসীর পাশে থাকব।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ বরগুনা উপকূলে অবস্থান করছে উদ্ধার তৎপরতাসহ ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমের জন্য। এছাড়া একটি ল্যান্ডিং ক্রাফটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই ল্যান্ডিং ক্রাফটি ঘূর্ণিঝড় পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী সময়ে উদ্ধার অভিযানসহ ত্রাণ তৎপরতায় ব্যবহার করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু বলেন, আমরা সাধারণ মানুষের পাশে রয়েছি। শুধু আমাদের একটাই অনুরোধ সাধারণ মানুষ যেন; আমাদের কথা রাখেন। আমাদের নির্দেশনা অনুযায়ী তারা যেন নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান। তারা যদি স্বেচ্ছায় ও নিরাপদ আশ্রয় না যান তাহলে আমরা বলপ্রয়োগ করতে বাধ্য হব।
তিনি আরও বলেন, করোনাভাইরাসের মহামারির মধ্যে এরকম একটি ঘূর্ণিঝড় আমাদের চরম বিপাকে ফেলে দিয়েছে। তারপরও আমরা সর্বোচ্চ প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। সাধারণ মানুষকে সহযোগিতার জন্য আমাদের পর্যাপ্ত খাদ্য মজুত রয়েছে।