লিবিয়া থেকে জীবন নিয়ে ফেরাদের ‘ভয়াবহ অভিজ্ঞতা’
প্রকাশিত হয়েছে : ৬:১২:১৬,অপরাহ্ন ২৯ জানুয়ারি ২০২০ | সংবাদটি ৩৩৫ বার পঠিত
ঝিনাইদহ থেকে সংবাদদাতা:: লিবিয়া থেকে দেশে ফিরেছেন ১৪৮ জন বাংলাদেশি অভিবাসী। এর মধ্যে রয়েছেন যুদ্ধে আহত, সমুদ্র পথে ইউরোপ যেতে ব্যর্থ এবং লিবিয়ার জেলে বন্দি থাকা কয়েকজন।
জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা আইওএম ভলান্টারি হিউম্যানাটেরিয়ান রিটার্ন (ভিএইচআর) কর্মসূচির মাধ্যমে বুধবার (২৯ জানুয়ারি) লিবিয়া থেকে এসব বাংলাদেশিকে নিরাপদে দেশে ফিরতে সাহায্য করে।
অভিবাসীদের ফিরিয়ে আনতে একটি বিশেষ ভাড়া করা বিমানেরও ব্যবস্থা করে আইওএম।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) লিবিয়ার মিসারত বিমানবন্দর থেকে রওনা দিয়ে বুধবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায় বিমানটি।
ফিরে আসা অভিবাসীরা আইওএম লিবিয়া থেকে সামাজিক সেবা, তৎক্ষণিক সেবা, ফিরে আসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করা, স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং বাংলাদেশ সরকারের দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযেগে করতে সহায়তা পেয়েছে।
ঢাকায় পৌঁছানোর পর বিমানবন্দরে আইওএম বাংলাদেশ এর পক্ষ থেকে বাড়ি ফিরতে প্রত্যেকে ৪ হাজার ৭৩০ টাকা, খাবার, স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও মানষিক সেবা পেয়েছেন। আগামীতে এই অভিবাসীদের অর্থনৈতিক সহযোগিতাও করবে আইওএম, যাতে তারা বাংলাদেশে আয় করে জীবন চালাতে পারে।
ফিরে আসাদের মধ্যে ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুরের মো. আকবর নামে একজন রয়েছেন। সেখান জীবন যাপন বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভাগ্য বদলের আশায় গ্রামের দালাল ধরে চার বছর আগে গিয়েছিলেন লিবিয়ায়। বেতন ছিল খুবই কম। কোনোমতে চলছিল। কিন্তু নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে তিনি ফিরে এসেছেন।
যে কারখানায় আকবর কাজ করতেন, হঠাৎ বিমান হামলা হয় সেখানে। ৪ বাংলাদেশিসহ ১৩ জন মারা যায়। আকবর বলছিলেন, ‘সে এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতা। মনে হল অল্পের জন্য জীবনটা বাঁচল। সিদ্ধান্ত নিলাম দেশে ফিরে আসব।’
এরপর লিবিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাস হয়ে আইওএম এর সাথে যোগাযোগ করেন আকবর। স্বেচ্ছায় দেশে ফেরার আগ্রহ প্রকাশ করেন। বুধবার ১৪৮ জনের সাথে আকবর দেশে ফেরেন। তিনি বলেন, ‘এ এক বিরাট উপকার। কারণ আইওএম-এর মাধ্যমে জীবন নিয়ে দেশে ফিরতে পেরেছি।’
প্রত্যাবর্তনকারীদের মধ্যে ৮ জন শারীরিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তি আছেন। অসুস্থ ব্যক্তিদের নিবিড়ভাবে স্বাস্থ্য সেবা দেয়া হয়েছে এবং চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তির জন্য সহায়তা করা হয়েছে।
আইওএম বাংলাদেশের চিফ আব মিশন গিওর্গি গিগাওরি বলেন, ‘লিবিয়ার প্রতিকূল অবস্থা অব্যাহত থাকায় ঝুকিপূর্ণ বাংলাদেশিদের সুরক্ষা ও সহায়তা দিতে সর্বদা আমরা তৎপর। যারা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে তাদের তাৎক্ষণিক সব ধরনেরর সহযোগিতা নিশ্চিত করছি আমরা। একই সাথে ফিরে আসা অভিবাসীদের দীর্ঘমেয়াদী সহযোগিতাও করব আমরা।’