বিশাল জয়ে পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে ইংল্যান্ড!
প্রকাশিত হয়েছে : ৮:১৫:২৬,অপরাহ্ন ১৮ জুন ২০১৯ | সংবাদটি ৪০১ বার পঠিত
আমাদের প্রতিদিন ডেস্ক:: দ্বাদশ বিশ্বকাপের ২৪তম ম্যাচে আফগানিস্তানকে রান চাপায় পিষ্ঠ করেছে স্বাগতিক ইংল্যান্ড। ৩৯৮ রানের পাহাড় ডিঙাতে গিয়ে ৮ উইকেটে ২৪৭ রান তুলতেই নির্ধারিত ওভার শেষ হয় আফগানদের। ১৫০ রানের বিশাল জয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে গেল এউইন মরগানের দল।
পাঁচ ম্যাচে স্বাগতিকদের ৪ জয়ে পয়েন্ট ৮। সমান ম্যাচে সমান পয়েন্ট থাকলেও রানরেটে পিছিয়ে আছেন বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। ৭ পয়েন্ট নিয়ে এরপরই ভারত ও নিউজিল্যান্ড। ৫ পয়েন্ট নিয়ে বিশ্বকাপের টেবিলে ৫ নম্বরে বাংলাদেশ।
এউইন মরগান, জনি বেয়ারেস্টো ও জো রুটের ঝড়ো ব্যাটে ৬ উইকেটে ৩৯৭ রান করেছে ইংল্যান্ড। চলতি বিশ্বকাপের এটি সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের রেকর্ড। ম্যাচে ১৭টি ছক্কা হাঁকিয়ে বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক। জবাব দিতে নেমে নির্ধারিত ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৪৭ রানে থামে আফগানরা।
পাহাড় ডিঙাতে নেমে মাত্র ৪ রানে ওপেনার নুর আলী জাদরান আউট হলে দলের হাল ধরেন গুলবাদিন নাইব ও রহমত শাহ। দ্বিতীয় উইকেটে তারা ৪৮ রানের জুটি গড়েন। ২৮ বলে ৩৭ রান করে ফেরেন আফগানিস্তানের অধিনায়ক গুলবাদিন নাইব। এরপর তৃতীয় উইকেটে হাসমতউল্লাহর সঙ্গে ৫২ রানের জুটি গড়তেই বিপদে পড়ে যান রহমত শাহ। ৭৪ বলে ৪৬ রান করে ফেরেন তিনি।
২৪.৫ ওভারে দলীয় ১০৪ রানে তিন ব্যাটসম্যানের বিদায়ের পর দলের হাল ধরেন হাসমতউল্লাহ ও আসগর আফগান। চতুর্থ উইকেটে তারা ৯৪ রানের জুটি গড়েন। ৪৮ বলে তিনটি চার ও ২টি ছক্কায় ৪৪ রান করে ফেরেন সাবেক অধিনায়ক আসগর আফগান। মাত্র ৯ রানে আউট হন মোহাম্মদ নবী।
ব্যাটসম্যানদের এই আসা-যাওয়ার মিছিলে ব্যতিক্রম ছিলেন হাসমতউল্লাহ। ইনিংসের শেষ দিকে জফরা আর্চারের গতির বলে বোল্ড হওয়ার আগে ১০০ বলে পাঁচটি চার ও দুটি ছক্কায় ৭৬ রান করে ফেরেন হাসমত। তার বিদায়ের পর ১৩ বলে ১৫ রান করে ফেরেন নজিবুল্লাহ জাদরান। শেষ দিকে রশিদ খান ও ইকরাম আলিখিনরা দলের পরাজয়ের ব্যবধান কিছুটা কমালেও হারা এড়াতে পারেননি।
মঙ্গলবার (১৮জুন) ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্রাফোর্ডে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন ইংলিশ অধিনায়ক এউইন মরগ্যান। ব্যাট করতে নেমে আফগানিস্তানের বোলারদের নিয়ে রীতিমত ছেলেখেলা করেছেন ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা।
জনি বেয়ারস্টো একটুর জন্য সেঞ্চুরি পাননি। ৯৯ বলে ৮ বাউন্ডারি আর ৩ ছক্কায় ইংলিশ ওপেনার আউট হন ৯০ রানে। ৩১ বলে ২১ করে সাজঘরে ফেরেন জেমস ভিন্স। দলীয় ৪৪ রানের মাথায় ভিন্স আউট হওয়ার পর বেয়ারস্টো আর জো রুট দ্বিতীয় উইকেটে যোগ করেন ১২০ রান। তৃতীয় উইকেটে মরগানের সঙ্গে রুট ১০১ বলে গড়েন ১৮৯ রানের জুটি। গুলবাদিন নাইবের বলে রুটের আউটে ভাঙে এই জুটি। ৮২ বলে ৫ চার আর ১ ছক্কায় ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান করেন ৮৮ রান।
তবে ইয়ন মরগান তুলে নিয়েছেন বিধ্বংসী এক সেঞ্চুরি। মাত্র ৫৭ বলে শতরান করেন মরগান। বিশ্বকাপ ইতিহাসে যা কীনা চতুর্থ দ্রুততম সেঞ্চুরি। মাত্র ৭১ বলে ১৪৮ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন তিনি। তার ইনিংসে ৪টি চারের পাশাপাশি ছক্কা ১৭টি।
এটি শুধু বিশ্বকাপেই নয়, ওয়ানডে ইতিহাসেই এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ছক্কার বিশ্বরেকর্ড! এতদিন রেকর্ডটি যৌথভাবে ছিল- রোহিত শর্মা, এবি ডি ভিলিয়ার্স ও ক্রিস গেইলের। তিনজনই এক ইনিংসে হাঁকিয়েছিলেন ১৬টি করে ছক্কা।
শেষদিকে আফগানিস্তান উইকেট পেলেও স্বাগতিকদের রানের পাহাড়ে উঠা ঠেকাতে পারেনি। অল্পের জন্য চারশ রানের ল্যান্ড মার্ক ছুঁতে পারেনি ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা। ৬ উইকেটে তারা স্কোর বোর্ডে জমা করেছে ৩৯৭ রান। আফগানিস্তানের পক্ষে গুলবাদিন নাইব ও দৌলত জাদরান ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন।
চার ম্যাচে তিন জয় (দক্ষিণ আফ্রিকা, বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে) আর এক হারে (পাকিস্তানের বিপক্ষে) ৬ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে রয়েছে হট ফেভারিট ইংল্যান্ড। আজ আফগানদের হারিয়ে বিশ্বকাপের শেষ চারে উঠার লড়াইয়ে নিজেদের জায়গা আরো পোক্ত করতে চায় ইংলিশরা।
চার ম্যাচে চার হারে (অস্ট্রেলিয়া, শ্রীলঙ্কা, নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে) কোনো পয়েন্ট না পাওয়ায় তালিকার তলানিতে দশম স্থানে আফগানিস্তান। ওয়ানডে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ আসরে এখনো পর্যন্ত কোনো জয়ের মুখ দেখেনি তারা।
হ্যামস্ট্রিং ইনজুরির কারণে এই ম্যাচে খেলছেন না ওপেনার জেসন রয়। ফলে একাদশে ২টি পরিবর্তন নিয়ে খেলছে ইংল্যান্ড। রয়ের পরিবর্তে জনি বেয়ারস্টোর সঙ্গে ইনিংস ওপেন করবেন জেমস ভিন্স।
এ বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত চারম্যাচ খেলে ৩টিতে জয় পেয়ে পয়েন্ট টেবিলে চার নাম্বারে আছে ইংল্যান্ড। অন্যদিকে আফগানিস্তান এখন পর্যন্ত ৪ ম্যাচে একটিতেও জয়ের দেখা পায়নি। বিশ্বকাপে এর আগে মাত্র একবারই মুখোমুখি হয়েছিল এ দুই দল। বৃষ্টি বিঘ্নিত সে ম্যাচে আফগানিস্তানকে বৃষ্টি আইনে ৯ উইকেটে হারায় ইংল্যান্ড।
ইংল্যান্ড একাদশ: জেমস ভিন্স, জনি বেয়ারেস্টো, জো রুট, এউইন মরগান (অধিনায়ক), বেন স্টোকস, জস বাটলার (উইকেটরক্ষক), ক্রিস ওকস, মঈন আলী, জোফরা আর্চার, মার্ক উড, আদিল রশিদ।
আফগানিস্তান একাদশ: রহমত শাহ, নুর আলী জাদরান, হাশমতউল্লাহ জাজাই, আসগর আফগান, মোহাম্মদ নবী, ইকরাম আলী খীল (উইকেটরক্ষক), গুলবদিন নাইব (অধিনায়ক), নাজিবুল্লাহ জাদরান, রশীদ খান, মুজিব-উর রহমান, দৌলত জাদরান।